কলকাতা: অনুমতি ছিল ৪ তলার, কিন্তু বেআইনিভাবে বানানো হয়েছিল ৬ তলা বিল্ডিং। বড়বাজারের এই হোটেলে অবৈধ নির্মাণের মতো মারাত্মক অভিযোগও উঠেছে। বড়বাজারে হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ১৪ জনের। কিন্তু প্রশ্ন হল, হোটেলে আগুন কীভাবে এত ভয়াবহ আকার নিল? এনিয়ে মারাত্মক অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, রেস্তোরাঁয় তৈরি করা হচ্ছিল পানশালা। তার জন্য় হোটেলের একতলার সমস্ত জানলা ইটের গাঁথনি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রবল ধোঁয়ায় কার্যত গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয় হোটেল। দমবন্ধ হয়ে শেষ হয়ে যায় একের পর এক তরতাজা প্রাণ। 

আবগারি দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, পানশালার লাইসেন্স পেতে দমকলের NOC প্রয়োজন। দমকলের ডিজি বলছেন, সেরকম কিছু এক্ষেত্রে ছিল না। তবে কীকরে হোটেলে পানশালা বানানো হচ্ছিল? উঠছে সেই প্রশ্নও। দমকলের ডিজি রণবীর কুমার বলেন, 'ডিপার্টমেন্টে NOC ২০২২-এ ওঁরা করেছিলেন। তারপর রিনিউ করাননি। লাস্ট যেটা আমরা পাচ্ছি, সেটা ২২-এ পাচ্ছি। তারপরে যে পুনর্নবীকরণ হয়, সেটা হয়নি। কোনও সিস্টেম কাজ করছিল না। মামলা করে দেওয়া হয়েছে তো। মামলা অলরেডি দায়ের হয়ে গেছে। FIR হয়ে গেছে।

নিয়ম অনুযায়ী, স্কুল বা কোনও ধর্মীয় স্থান এমনকী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ১ হাজার ফুট বা ৩০৫ মিটারের মধ্য়ে মদের দোকান বা কাউন্টার তৈরি করা যায় না। এই প্রেক্ষাপটে, বড়বাজারের বহুতলে যে পানশালা তৈরি হচ্ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।                                                                                

দমকল সূত্রে খবর, ঋতুরাজ হোটেলের দোতলায় পানশালার ডান্স ফ্লোর তৈরি ও স্টেজ নির্মাণের কাজ চলছিল। সেখানে রাখা ছিল আঠার ড্রাম, স্টেজ তৈরিতে ব্য়বহৃত রাসায়নিকের ড্রাম। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, সেখানেই কোনওভাবে আগুন লাগে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে দোতলার অন্য় অংশে। দোতলাতেই রাখা একটি LPG সিলিন্ডার ফেটে যায়। এরপরই লিফটের টানেল ও ২টি সিঁড়ি বরাবর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে থাকে বাকি তলগুলিতে। 

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দমকলের তরফে জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার ঋতুরাজ হোটেলের মালিক আকাশ চাওলা ও ম্যানেজার গৌরব কপূর। অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা।