অরিন্দম সেন, জলপাইগুড়ি: মানুষের 'লালসার শিকারে' প্রাণ গেল এক নিরীহ প্রাণীর। শুধু তাই নয়, হরিণ যেখানে শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, সেখানে বেআইনিভাবে হরিণ শিকার করে তার মাংস দিয়ে বনভোজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও গভীর রাতের এই পরিকল্পনা ভেস্তে দিল বনদফতর।
বনদফতরের আচমকা অভিযানে ওই দলের তিন-চার জন পালিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয় এক। ধৃতকে আজ সোমবার আলিপুরদুয়ার আদালতে হাজির করে হেপাজতে নেবার আর্জি জানিয়েছে বনদফতর।
ঠিক কী ঘটেছে?
শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পূর্ব-বিভাগের অন্তর্গত নর্থ রায়ডাক রেঞ্জের ময়নাবাড়ির জঙ্গলে। ভূটান লাগোয়া এই জঙ্গলের মাঝেই গভীর রাতে চলছিল স্পটেড হরিণ শিকারের পর ভোজনের আয়োজন। জানা যায়, বনকর্মীদের গভীর রাতের টহলদারীতে জঙ্গলের মাঝে কিছু অস্বাভাবিক শব্দে সন্দেহ দানা বাধে। চলে তল্লাশি। বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশির পর জঙ্গল মাঝে জলাশয়ের পাশেই নজরে আসে শব্দের রহস্য।
সূত্রের খবর, কমপক্ষে তিন-চার জনের একটি দল তখন রান্নার প্রস্তুতিতে। আচমকা বনকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গলে গা ঢাকে দিয়ে পালাতে সক্ষম হলেও হাতেনাতে ধড়া পড়ে যায় একজন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২০ কেজি কাঁচা হরিণের মাংস। এছাড়াও রান্নার সামগ্রীও উদ্ধার হয়েছে। ধৃতকে রবিবার আলিপুরদুয়ার আদালতে পেশ করার পর জেল হেফাজতে নির্দেশ দেওয়া হলেও ফের আজ বনদফতরের পক্ষ থেকে হেফাজতের আর্জিও করা হয়েছে।
বনদফতর সূত্রে খবর, শিকার করা হরিণটি পূর্ণ বয়ষ্ক স্পটেড প্রজাতির। ওই ধৃত ব্যক্তির নাম অভিরাম টোপ্পো, শামুকতলা থানার অন্তর্গত কার্তিকা চা বাগানের ধোবি লাইনের বাসিন্দা সে। পেশায় শ্রমিক এই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে জঙ্গলে অনাধিকার প্রবেশে বন্যপ্রাণী শিকারসহ ওয়াল্ড লাইফ আইনে মামলা রুজু করে হেফাজতের আর্জি করা হয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প (পূর্ব বিভাগ)-এর উপক্ষেত্র অধিকর্তা দেবাশীষ শর্মা বলেন, সোমবার আলিপুরদুয়ার আদালতে ধৃতকে হেফাজতে নেবার আর্জি করা হয়েছে। কারা এর সঙ্গে যুক্ত সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে। তারপর চলবে বাকিদের তল্লাশি। পাশাপাশি গভীর রাতে জঙ্গলের টহলদারিতেও আরো কঠোর নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বক্সা পূর্ব বিভাগের উপক্ষেত্র অধিকর্তা।