কলকাতা : দুর্নীতির মূলে যেতে একাধিক সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই বিচারপতি এখন সিবিআই তদন্ত নিয়ে আশাহত ? চমকে দেবে তাঁর মন্তব্য। তিনিই কি না এখন সিবিআই নিয়ে খুশি নন !

হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ডজন খানেক সিবিআই, শেষে নোবেল প্রাইজের মত হবে!’ বিচারপতি বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে সিবিআই-এর (CBI) থেকে সিট (SIT) ভাল’। হতাশার সুরে তাঁর মন্তব্য, ‘টানেলের শেষে কোনও লাইট দেখতে পাচ্ছি না’। একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর এখন তাঁর অভিমত, ‘আমি ক্লান্ত, নভেম্বর মাসে প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম...‘তারপর কী হয়েছে,  কিছুই নয়, ক্লান্ত আমি’। 

‘রাজ্যের কাছে এটা আনন্দের নয়’ প্রতিক্রিয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া বিচারপতি এখন বলছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে সিবিআই কতটা কী করবে!’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যের প্রধান তিনি কিছু করবেন আশা করব’। 

জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘নভেম্বরের পর থেকে কিছুই করেনি সিবিআই’। ‘কাকে তদন্ত করতে বলব, এটা চলতে পারে না, ক্যামেরার সামনে সাতদিন, কিন্তু ফল কী? টিভি কাগজে ছবি এল, কী হবে? ‘কর্মহীনদের কি হবে?  আমার একটাই উদ্দেশ্য সঠিক ব্যক্তিরা চাকরি পাক’ প্রতিক্রিয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। শিক্ষা-দুর্নীতি তদন্তে সিবিআই কী করবে তা নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি। সেই সঙ্গে আপাতত তাঁর আশা, রাজ্যের প্রধান কিছু করবেন !


বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর নির্দেশেই উত্তরবঙ্গ থেকে এসে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে হয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একসময়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনেরই আইনজীবী ছিলেন। তিনি অবশ্য কেরিয়ার শুরু করেছিলেন WBCS অফিসার হিসেবে।   তারপর চাকরি ছেড়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০১৮-র ২ মে কলকাতা হাই কোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২০-র ৩০ জুলাই হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।  এখন SSC-মামলায় তাঁর রায়ে আশার আলো দেখছে বহু চাকরিপ্রার্থী। সেই বিচারপতির গলাতেই এবার হতাশার সুর।