কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক হিংসা, অশান্তি নিয়ে তরজা অব্যাহত। তার মধ্যেই আদালতে 'অস্বস্তি' বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। তাঁর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখবে পুলিশ, নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।  অভিযোগের গ্রহণযোগ্যতা থাকলে এফআইআর দায়ের করতে পারবে পুলিশ, অনুমতি দিল আদালত (Calcutta High Court)। 


বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন আদালত বলে, "শুভেন্দু অধিকারীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তি হয়েছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করতে পারবে পুলিশ।" শুধু তাই নয়, আদালত আরও জানায়, সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ঊর্ধ্বে রাখার ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। 


তবে আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ, নির্দেশ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চের। পঞ্চায়েত ভোটের হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে FIR দায়ের করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসেও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে, তা নিয়ে
মামলা দায়ের করেন আইনজীবী সুমন সিংহ। 


আরও পড়ুন: Durgapur: চাপের মুখে পিছু হঠল দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশন, ৬ দিন পর কাটল ACJM-এর এজলাসের অচলাবস্থা


মামলাকারীর দাবি ছিল, সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন একাধিক উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন বিরোধী দলনেতা। বড়জোড়া, নন্দীগ্রাম, নয়াগ্রাম সহ একাধিক জায়গায় তার বক্তব্যের মাধ্যমে এই অশান্তির প্ররোচনা দিয়েছেন শুভেন্দু। কিসের ভিত্তিতে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারির কথা বলেছে শুভেন্দু, কিসের ভিত্তিতে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের কথা বলছেন, তোলা হয় প্রশ্ন।


মামলাকারী আদালতে জানান, ১৩ই জানুয়ারি থেকে শুরু করে ৮ই জুলাই পর্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে অশান্তিতে প্ররোচনা দিয়েছেন শুভেন্দু। যে যে মর্মে শুভেন্দু অধিকারী হুমকি দিয়েছেন সেই মোতাবেক অশান্তির ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ দায়েরের পরেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না, প্রশ্ন তোলা হয় আদালতে। 


মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে বলেন, "কলকাতা হাইকোর্ট থেকেই শুভেন্দু অধিকারী রক্ষাকবচ পেয়েছেন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করা যাবে না এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে আমরা যখনই অভিযোগ করছি তখনই পুলিশ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ দেখাচ্ছেন।"


এর পাল্টা শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতে বলেন, "এই মামলা জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর  শুভেন্দু অধিকারীকে এই রক্ষাকবচ দেওয়া হয়। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ভুয়ো এফআইআর করেছিল রাজ্য পুলিশ। ৫০০০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পর্যন্ত মামলা রুজু করেছে।২৬ টি এফআই করা হয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চ থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত রাজ্যের চ্যালেঞ্জ খারিজ হয়েছে।"

তবে হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের জানান, এই মামলার সঙ্গে বৃহত্তর জনস্বার্থ জড়িয়ে আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। আদালতের নির্দেশ পেলে পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলে জানায় রাজ্য সরকারও।