সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের গ্রুপ ডি মামলায় ১৯১১ জনের বেতন ফেরতের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। সিঙ্গল বেঞ্চের বাকি নির্দেশ বহাল রাখলেও বেতন বন্ধের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চের। কয়েকদিন আগেই গ্রুপ ডি পদে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল করার পাশাপাশি তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে শ্রমদান করেছেন, কেন বেতন ফেরাবেন জানতে চেয়ে যে নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছিল।
কমিশনের সওয়াল
গ্রুপ ডি মামলায় সওয়াল জবাবের মাঝে কমিশনের পক্ষে সওয়াল 'অনেক ভুল হয়েছে, এখন সংশোধন করার সময় এসেছে, আমরা সেটাই করছি। কোনও দুর্নীতির জন্য প্রতিষ্ঠানের বদনাম হতে দেওয়া যায় না'। পাশাপাশি দেড় বছর সময় লেগেছে কমিশনের যুধিষ্ঠির হতে, একদিনে হয়নি, সওয়াল কমিশনের। পাল্টা আত্মপক্ষের সুযোগ না দিয়েই রায় দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ, দাবি চাকরিহারাদের আইনজীবীর। সমস্ত সওয়াল জবাব শোনার পর সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিল সহ বাকি নির্দেশ বহাল রাখলেও বেতন ফেরানোর নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
চাকরি বাতিল, বেতন বন্ধের নির্দেশ
CBI ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬-র গ্রুপ ডি পরীক্ষার ২ হাজার ৮২৩টি OMR শিটে নম্বর কারচুপি করা হয়েছিল। তারমধ্য়ে ১ হাজার ৯১১ জনকে সুপারিশপত্র দেয় স্কুল সার্ভিস কর্মিশন। গত শুক্রবার, মাত্র ৭ মিনিটে, বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত এই ১ হাজার ৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এই অযোগ্য় প্রার্থীদের অবিলম্বে বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
শুক্রবার থেকেই আর স্কুলে ঢুকতে পারবেন না তাঁরা বলেও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর কড়া রায় ছিল, এই অযোগ্য় প্রার্থীরা দেশের কোনও সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কোনও ক্ষেত্রে, আদালতের অনুমতি ছা়ড়া এঁদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা যাবে না।নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এই ১ হাজার ৯১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে CBI। কেউ অসহযোগিতা করলে, প্রয়োজনে হেফাজতেও নিতে পারে কেন্দ্রীয় এজেন্সি, বলেও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরি হারানো গ্রুপ ডি কর্মীদের একাংশ।