কলকাতা: এজলাসে বসেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিচারককে ফোন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের  (Justice Abhijit Ganguly)। জেলা বিচারককে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলেন তিনি। পেনশন দেওয়া হোক নাতিকে, দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন প্রয়াত শিক্ষিকা শিউলি বর্মনের বাবা। সেই মামলাতেই এজলাসে বসে এমন নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 


জেলা বিচারককে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলেন


২০২০-র অগাস্ট মাসে মারা যান পেশায় শিক্ষিকা শিউলি। তাঁর মৃত্যুর সময় ছেলের বয়স ছিল ১৫ বছর। সেই সময় স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল শিউলির। কিন্তু শিউলির স্বামী সন্তানের দেখাশোনা করছেন না বলে জমা পড়ে অভিযোগ। তাই নাতিকে মায়ের প্রাপ্য পেনশন পাইয়ে দিতে মামলা করেছিলেন শিউলির বাবা। 


সেই নিয়ে বুধবার শিউলির বাবা জীবনানন্দ বর্মনকে পর পর প্রশ্ন করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানতে চান, নাতির অভিভাবকত্ব চেয়ে তিনি কোনও মামলা করেছেন কিনা। উত্তরে জীবনানন্দ জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের নিম্ন আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এর পরই সরাসরি এজলাস থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেল বিচারককে ফোন করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন তিনি। 


আরও পড়ুন: Presidency University: রীতি ধরে রাখল প্রেসিডেন্সি, ফটকের বাইরেই মণ্ডপ-প্রতিমা, ‘পরিবর্তন একদিনে হয় না,’ বলছে TMCP


প্রয়াত শিউলির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জীবিতকালেই স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। তিনি মারা যাওয়ার পরও ছেলের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি তাঁর স্বামী। ফলে তাঁর নাবালক ছেলেটি দাদুর কাছেই মানুষ হচ্ছে। অথচ শিউলির পেনশনের টাকা তুলছেন তাঁর স্বামী। সেই টাকাত পেয়েও ছেলের বাবা হিসেবে কোনও দায়-দায়িত্ব পালন করছেন না তিনি। 


তার জেরে এর আগে নিম্ন আদালতে নাতির অভিভাবকত্ব চেয়ে মামলা করেন শিউলির বাবা। তার পর কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হন। মেয়ের পেনশনের টাকা যাতে নাতিকে দেওয়া হয়, তার জন্য আবেদন জানান। সেই মামলার শুনানিতে চলছিল বিচারতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিষয়টি জানতে পেরে নিম্ন আদালতের বিচারককে ফোন করেন তিনি। দ্রুত অভিভাবকত্ব নিয়ে দায়ের মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন। 


নিম্ন আদালতে নাতির অভিভাবকত্ব চেয়ে মামলা করেন শিউলির বাবা


দুর্নীতি-সহ একাধিক মামলার শুনানির জন্য ইতিমধ্যেই পরিচিতি তৈরি হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। তার জন্য বিভিন্ন সময় তাঁকে নিয়ে বিতর্ক যেমন হয়েছে, তেমনই প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে তাঁর নাম সবসময়ই চর্চায়। এজলাসে বসে যে ভাবে নিম্ন আদালতের বিচারককে সরাসরি ফোন করে তৎপরতা দেখিয়েছেন তিনি, তাও এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।