কলকাতা: রেশন দুর্নীতি তদন্তে শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন ইডি (ED) আধিকারিকরা। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। কিন্তু তল্লাশি দূর, তৃণমূল নেতার অনুগামীদের হাতে মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়ে পালাতে হল তাঁদের। মার খেয়েছেন সাংবাদিকরাও। কারা মারলেন? উন্মত্ত জনতার ভিড়ে কারা ছিলেন? তাঁদের পরিচয় ঠিক কী? সেই প্রশ্ন যখন উঠছে। তখনই হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে একটি মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)।
এদিন রাতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'যাঁদের লেলিয়ে দেওয়া হল তাঁরা ভারতবর্ষের নাগরিক তো? তাঁরা অন্য করে জায়গা থেকে নৌকা করে এখানে ঢোকেননি তো? কারা করেছেন ঘটনাটা?' তিনি আরও বলেন, 'যদি উপযুক্ত তদন্ত হয় আমার ধারণা পুরো সত্যটা বেরিয়ে আসবে এবং কারা কাকে আশ্রয় দিচ্ছে তা জানা যাবে।'
যা ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছেন উন্মত্ত জনতার সামনের সারিতে একাধিক মহিলা রয়েছেন। ভিড়ে রয়েছেন বহু পুরুষও। ওই হামলার পরে প্রায় গোটা দিন কেটে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কয়েকজনকে আটক করা হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
তিনি আরও বলেছেন যে, 'যাঁর কাছে গিয়েছিল ইডি, আশা করব রাত ১২টার মধ্যে ইডির কাছে হাজিরা দেবেন। আমি এটা আশা করব। বাড়িতে শাহাজাহান কে পাওয়া যায়নি, এতই সাহসী যে ইডির ভয়ে কোথায় চলে গিয়েছিলেন।' এদিন সংবাদমাধ্যমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, 'সংবাদ মাধ্যম দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলা খুলে কথা বলছে। আদালতের জন্য় যতটা না দুর্নাীতি প্রকাশ্যে এসেছ তার থেকেও বেশি এসেছে সংবাদ মাধ্যমের জন্য।' এমন হামলায় কি তদন্তকারীদের মনোবল ভেঙে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'এভাবে মনোবল ভেঙে দেওয়া যায় না। এতে মনোবল বাড়ে। আমার মনে হয় কিছু হবে না, তাঁরা যথেষ্ট পোড় খাওয়া অফিসার, তাঁদের মন ভাঙা যাবে না।'
অভিযোগ বিরোধী দলনেতারও:
হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে এদিন বিকেলেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। X -হ্যান্ডেলে তাঁর তোপ, 'মমতার উৎসাহে শেখ শাহজাহানের মতো অপরাধীরা রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসের মুক্তাঞ্চল তৈরি করেছে। এই ধরনের দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ ব্যবস্থা নিক এনআইএ।' সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ একটি ট্যুইট করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তল্লাশির সময় ইডি আধিকারিক, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং সাংবাদিকদের উপর হামলায় ঘটনার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশির সময় এই হামলার পিছনে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা রয়েছেন। ওই পোস্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, অমিত শাহ, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং ইডি, সিআরপিএফ-এর হ্যান্ডেলকেও ট্যাগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন:'রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা আছে বলে মনে হয় ?' প্রশ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের