নয়াদিল্লি: ভারতীয় নৌসেনার দ্রুত পদক্ষেপে জলদস্যুদের হাত থেকে নিরাপদে থেকে উদ্ধার হলেন ১৫ জন ভারতীয়-সহ 'MV Lila Norfolk' বাণিজ্য়িক ভেসেলের ২১ জন কর্মীই। রাতের দিকে খবরটি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে নৌসেনার মুখপাত্র। তার পরই স্বস্তির নিঃশ্বাস বহু ভারতীয়ের। অনেকে আবার জানাচ্ছেন, ভারতীয় নৌবাহিনী যে এমন কিছু একটা করে ফেলেছে সেটা মোটামুটি সন্ধের দিকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। 






 


নৌসেনার দাবি...
এক্স হ্যান্ডেলের পোস্ট অনুযায়ী, ভারতীয় নৌবাহিনীর অত্য়ন্ত দক্ষ MARCO বাহিনী ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে যে জাহাজে কোনও জলদস্যু নেই। যে ভাবে উত্তর আরব সাগরের জলরাশির মধ্যে বাণিজ্যিক ভেসেলটিকে ইন্টারসেপ্ট করে ছিনতাইকারীদের সেটি খালি করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, তাতে ভয় পেয়েই সম্ভবত ভেসেল ছেড়ে পালায় তারা। আপাতত ভেসেলটির পাশেই রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ আইএনএস চেন্নাই। ভেসেলে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো ও তা নতুন করে চালু করার চেষ্টা করতে সাহায্য করছে তারা, জানিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। 


বিশদ...
জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া জাহাজে আটকে থাকা ১৫ জন ভারতীয়কে উদ্ধার করতে শুক্রবার সন্ধের দিকেই সোমালিয়ার উপকূলে পৌঁছে গিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনার অত্যন্ত প্রশিক্ষিত কমান্ডো বাহিনী। বিপদবার্তা পেতেই, শুক্রবার বেলায় গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ আইএনএস চেন্নাই। তবে, কমান্ডো-অভিযানের আগে ছিনতাই করা জাহাজটির দখল ছাড়ার জন্য জলদস্যুদের দিকে হেলিকপ্টার মারফৎ সতর্কবার্তা পাঠায় আইএনএস চেন্নাই। সন্ধেয় খবর এসেছিল, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির ভারতীয় সমস্ত কর্মী সুস্থ রয়েছেন। ব্রাজিলের Port Du Aco থেকে বাহরাইনের দিকে যাচ্ছিল 'MV Lila Norfolk' নামে ওই জাহাজটি। সোমালিয়ার ৩০০ নটিক্যাল মাইল পূর্ব দিকে থাকার সময় জলদস্যুরা সেটি ছিনতাই করে। 
বাণিজ্যিক কাজে পাড়ি দেওয়া ভেসেলটি 'ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন'-এ বিপদসঙ্কেত পাঠিয়েছিল, ৪ জানুয়ারি সন্ধে নাগাদ, বন্দুকধারী ৫-৬ জন পরিচয়হীন ব্যক্তি ভেসেলে উঠে পড়েছে। সেই বার্তা পৌঁছয় ভারতীয় নৌসেনার কাছে। নজরদারির দায়িত্বে থাকা  আইএনএস চেন্নাইয়ের অভিমুখ ঘোরানোর সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি নৌসেনা কর্তৃপক্ষ। সাহায্য়ের জন্য সমুদ্রের জল কেটে এগোতে শুরু করে নৌসেনার ডেস্ট্রয়ার। প্রথমে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার উড়ে গিয়ে ভেসেলটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। জাহাজ খালি করতে বলা হয় ছিনতাইকারীদের। তার পর এদিনের অভিযান।


ভারতের প্রস্তুতি...
একের পর এক জাহাজে হামলার ঘটনা দেখে সমুদ্রে নজরদারির পাশাপাশি হানা প্রতিহত করার জন্য গত মাস থেকে নিজেদের জলসীমায় মোতায়েন যুদ্ধজাহাজ নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে ভারত। বিশেষত. ভারতের উপকূলের কাছে যে ভাবে একটি ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে, যাতে ইরানের দিকে আঙুল তোলে আমেরিকা, তার পর থেকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে চেয়েছিল নয়াদিল্লি। তার উপর আবার ইয়েমেনে ইরানের মদতপুষ্ট হুথি-জঙ্গিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে লোহিত সাগরে একের পর এক ভেসেলের নির্ধারিত পথ বদলাতে হয়েছে। সব মিলিয়ে জলসীমা তথা সার্বিক ভাবে জলপথ নিয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকার সময় এটি, মনে করে ভারত। সেই অনুযায়ী নজর দেওয়া হয়েছে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনে। 


 


আরও পড়ুন:'দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দিকে...', চিনে জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে প্রশংসা ভারতের