কলকাতা: বিচারপতি থাকাকালীন এজলাসে বসে রাজনৈতিক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল বার বার। সেই নিয়ে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সেই অভিষেককেই নিশানা করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নাম না করে বারং বার 'তালপাতার সেপাই' শব্দবন্ধটি ব্যবহার করতে শোনা গেল তাঁকে, একই সঙ্গে শোনা গেল ডায়মন্ড হারবারের উল্লেখও। ফলে অভিষেককেই তিনি নিশানা করলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নারদকাণ্ড আসলে 'তালপাতার সেপাই'য়ের চক্রান্ত বলেও দাবি করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। (Abhijit Ganguly on Narada)


মঙ্গলবার সকালে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের চেম্বারে গিয়েও পদত্যাগপত্রের প্রতিলিপি জমা দেন। এর পর দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে BJP-তে যাওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। আর সেখানেই তৃণমূল এবং দলের 'তালপাতার সেপাই'কে তীব্র আক্রমণ করেন। (Narada Case)


যে BJP-তে যোগ দিচ্ছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, এককালে নারদকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করতে শোনা গিয়েছে তাদের। অধুনা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ওই স্টিং অপারেশনের ফুটেজে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত শুভেন্দুকেও সেই নিয়ে বার বার আক্রমণ করেছে BJP. 


আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly: CPM-এ গেলেন না কেন? 'ধর্মে বিশ্বাসী তাই', জবাব অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের


কিন্তু নারদকাণ্ড নিয়ে মতামত চাইলে এদিন গোটা ঘটনাক্রমকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, "নারদকাণ্ড একটা চক্রান্ত। একটা লোক আছে, তালপাতার সেপাই না সেনাপতি, কী একটা বলে তাকে যেন ডাকে তৃণমূলের লোকজন। ওর খুড়শ্বশুরের অ্যালকেমিস্ট নামের একটা সংস্থা ছিল। তাঁকে দিয়ে এই কাণ্ড ঘটানো হয়। এটা পুরো চক্রান্ত।"


নারদকাণ্ডে যে ভিডিও সামনে এসেছিল, তাতে শুভেন্দু-সহ তৃণমূলের আরও অনেককেই দেখা গিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ উঠতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "ওটা কোনও স্টিং অপারেশনই নয়। ভদ্রলোককে ব্যবহার করে, চক্রান্ত করে, বিভিন্ন লোককে ফাঁসানো হয়। তালপাতার সেপাই যখন রাজনীতিতে দাঁড়াতে চাইছিল, সিনিয়রদের নামে বদনাম ছড়াতে চাইছিল। তাই এই কাজ করে। এর সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। চক্রান্তের দিকটা দেখতে হবে। কে করেছে, কেন করেছে, জানতে হবে। ইডি-তে অ্যালকেমিস্ট নিয়ে তদন্ত করছে!"


নারদ স্টিং অপারেশনে তৃণমূলের অনেককেই দেখা গিয়েছিল। দলের অন্দর থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়ে থাকলে, এখনও কেন রয়েছেন তাঁরা? জবাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "ওঁরা চক্রান্তের শিকার হয়েছেন। এখন আবার সেনাপতি বলেও ডাকছেনও। কোন যুদ্ধে জিতেছেন উনি, কেন সেনাপতি, জানি না।" নির্বাচনী ময়দানে তৃণমূলের 'সেনাপতি' যদি তাঁর প্রতিপক্ষ হন? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "দাঁড়ান না উনি! আমি কি ভয় পেয়ে পালাব নাকি? তাঁর দুর্বৃত্তদলের মোকাবিলা কী করে করতে হয়, দেখিয়ে দেব। ডায়মন্ড হারবারে ওঁর দুর্বৃত্ত দল রয়েছে। সেখানে দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা তাঁকে লক্ষ লক্ষ ভোটে হারাব।"