কলকাতা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে অপসারণ করা উচিত বলে এবার মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। বিশ্বভারতীর এক অধ্যাপককে সার্ন প্রজেক্টে কাজ করতে না দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিদ্যুৎ। তাতেই মঙ্গলবার এমন মন্তব্য করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর টিপ্পনি, "বাঙালি এই কারণেই কাঁকড়ার জাত"।


বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কটাক্ষ কলকাতা হাইকোর্টের


২০০৫ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সার্ন প্রজেক্টে লিড বিজ্ঞানী হিসেবে অধ্যাপক মানস মাইতির নাম পাঠায়। কিন্তু ২০২১ সালে বিশ্বভারতীতে একটি অশান্তিতে উপাচার্যর বিরুদ্ধে সরব হন মানসবাবু। তার পরই ওই অধ্যাপক-বিজ্ঞানীকে প্রজেক্ট থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সার্ন-এ চিঠি দেন বিদ্যুৎ। সেই নিয়েই এদিন এমন মন্তব্য করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 


শুধু তাই নয়, ওই অধ্যাপক-বিজ্ঞানীকে সার্ন প্রজেক্টে ফেরাতে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বভারতীকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তবে উপাচার্য সম্পর্কে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ একাধিক লেখালেখিতে 'বাঙালি কাঁকড়ার জাত' কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়। 


আরও পড়ুন: C V Ananda Bose: মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিলে অবশেষে সই রাজ্যপালের


'ভাবার সময়' উপন্যাসে 'বাঙালি কাঁকড়ার জাত' কথাটির উল্লেখ করেছেন লেখক বুদ্ধদেব গুহও। সেখানে মাড়োয়ারি কাঁকড়া ব্যবসায়ীর কথোপকথন তুলে ধরেন তিনি। তাতে দেখা যায়, ট্রেনের কামরায় ড্রাম ভর্তি কাঁকড়া নিয়ে উঠেছেন এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী। ড্রামের মুখ খোলা থাকায়,কাঁকড়া বেরিয়ে পড়তে পারে বলে তাঁকে সতর্ক করেন একজন। উত্তরে ওই ব্যবসায়ী জানান, ড্রামের কাঁকড়াগুলি বাঙালি। তার পর বাঙালির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের যে ব্যাখ্যা দেন ওই ব্যবসায়ী, তা হল, বাঙালি নিজে তো উপরে উঠবেই না, অন্য কাউকে উঠতে দেখলেও, টেনে নামিয়ে দেবে। 


বার বার বিতর্কে নাম জড়িয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের, এবার মন্তব্য আদালতের


বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে নিশানা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বভারতীর দায়িত্ব হাতে পেয়ে আসার পর থেকেই বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ। রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছেন কখনও তিনি। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। কখনও আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের সঙ্গেও ঝামেলায় জড়িয়েছেন। এমনকি বিষয়টি থানা-আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। সেই আবহেই তাঁর সম্পর্কে এই মন্তব্য করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।