কলকাতা: ঘোষণা মতোই বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে জানিয়েছেন BJP-তেই যোগদান করছেন। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে যে দলে যোগ দিতে চলেছেন তিনি, সেই BJP কি দুর্নীতিমুক্ত? প্রশ্নের উত্তর এড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের পদত্যাগী বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। (Abhijit Ganguly)


মঙ্গলবার সকালে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের চেম্বারে গিয়েও পদত্যাগপত্রের প্রতিলিপি জমা দেন। এর পর দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে BJP-তে যাওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। সেখানে তৃণমূলকে দুর্বৃত্তদের দল বলে উল্লেখ করেন। তৃণমূল জমানায় সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে, যার অনেক কিছু এখনও ঢাকা পড়ে রয়েছে বলে জানান। (Abhijit Ganguly on BJP)


কিন্তু যে দলে তিনি যাচ্ছেন, সেই BJP কি দুর্নীতিমুক্ত? প্রশ্নের জবাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপি দুর্নীতিমুক্ত, নাকি নয়, সেটা আমার মনে করার কথা নয়। আমি যদি কোনও দায়িত্ব পাই  সেই দলে, আমি যে কাজটা করব, সেটা অবশ্যই দুর্নীতি মুক্ত করার কাজ।" যাঁরা দুর্নীতি করেন না, তাঁদের এদিন রাজনীতিতে আহ্বানও জানান তিনি। ভদ্রলোক, শিক্ষিত বাঙালিদের রাজনীতিতে দেখতে চান বলে জানান। 


আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly: CPM-এ গেলেন না কেন? 'ধর্মে বিশ্বাসী তাই', জবাব অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের


লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্প্রতি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কোটি কোটি টাকার চাঁদা দিতেন তাবড় শিল্পপতি এবং কর্পোরেট সংস্থা। সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্য সামনে আনা হতো না। ফলে চাঁদা দেওয়া ব্যক্তি বা সংস্থা বিনিময়ে কিছু সুবিধা পাচ্ছেন কি না, তাও জানার উপায় ছিল না। যে কারণে নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে দেশের শীর্ষ আদালত। 


এই নির্বাচনী বন্ডকে ঘিরে বিতর্ক আজকের নয়। এই বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ। এদিন সেই নিয়ে প্রশ্ন করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "নির্বাচনী বন্ড দুর্নীতির উপায় না হলেও, স্বচ্ছতার অভাব ছিল।  সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য বিচারপতিরা ঠিক করে দিয়েছেন।"


অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন, এককালে নারদকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করতে শোনা গিয়েছে তাদের। অধুনা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ওই স্টিং অপারেশনের ফুটেজে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত শুভেন্দুকেও সেই নিয়ে বার বার আক্রমণ করেছে BJP. কিন্তু সেই মতামত চাইলে এদিন গোটা ঘটনাক্রমকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, "নারদকাণ্ড একটা চক্রান্ত। একটা লোক আছে, তালপাতার সেপাই না সেনাপতি, কী একটা বলে তাকে যেন ডাকে তৃণমূলের লোকজন। ওর খুড়শ্বশুরের অ্যালকেমিস্ট নামের একটা সংস্থা ছিল। তাঁকে দিয়ে এই কাণ্ড ঘটানো হয়। এটা পুরো চক্রান্ত।" নাম না করলেও, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তিনি 'তালপাতার সেপাই' বা 'সেনাপতি' নিশানা করেছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।