সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ভোটের মুখে আরও এক মামলায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ময়নায় বিজেপি কর্মী বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া খুনের মামলায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। 
১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের দায়িত্ব নিতে হবে এনআইএ-কে, জানানো হয়েছে এই নির্দেশে। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করে রিপোর্ট পেশের কথাও বলা হয়েছে। নির্দেশ কার্যকরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকায় হতাশ কলকাতা হাইকোর্ট। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে আগ্রহ দেখায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, মন্তব্য করলেন বিচারপতি। 


বিচারপতির বক্তব্য...
এদিন এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্ট নিজের পর্যবেক্ষণে জানায়, তাদের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন্দ্র যে এই নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি তা দুর্ভাগ্যজনক। এই নিয়ে কার্যত কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত। তবে ভোটের মুখে এই নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারণা অনেকের। এর পর এনআইএ কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে নজর থাকবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই। কিছু দিন আগে, দাঁড়িভিট কাণ্ডে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ যে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তা বহাল রাখে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। দাঁড়িভিট কাণ্ডে হাইকোর্ট নিজের পর্যবেক্ষণ এও জানিয়েছিল যে রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট সাহায্য করেনি।  তার পর পরই বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া খুনের মামলায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ। 


ফিরে দেখা...
গত বছর, ১ মে পঞ্চায়েত ভোটের আগে, বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে  অপহরণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার দিন বিকেল ৫টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে, বিজেপি নেতার স্ত্রী-ছেলেকে মারধর করে, বাইকে চাপিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ছিল। অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। ওই দিন, রাতেই বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে উদ্ধার হয় বিজয়কৃষ্ণের দেহ। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল। নেতা খুনের প্রতিবাদে গভীর রাতে ময়না থানার সামনে বিধায়ক অশোক দিন্দার নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। কিন্তু তার পর? ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে না পারায় ৩ অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছিল আদালত। 'বিজেপি কর্মীকে খুনের পরেও প্রকাশ্যে বোমা-বন্দুক নিয়ে ঘুরছে অভিযুক্তরা, এই মর্মে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। মৃতের স্ত্রী লক্ষ্মী ভুইয়াঁ অভিযোগ করেন, তাঁরা পুলিশের ভূমিকায় মোটেও খুশি নন। বলেছিলেন, 'পায়ে ধরে বলেছিলাম, স্যার আমার স্বামীকে বাঁচান।...পুলিশ আমাদের কোনও সাহায্য করেনি।'  একই সুর শোনা গিয়েছিল বিজয়কৃষ্ণের মেয়ে লক্ষ্মী ভুইয়াঁর কথাতেও। স্পষ্ট বলেছিলেন, 'এই রাজ্যের পুলিশকে আমাদের কোনও ভরসা নেই।' সেই মামলাতেই এবার এনআইএ-র নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।


আরও পড়ুন:চাঁদিফাটা রোদেই প্রচার, জনসংযোগ সারলেন তৃণমূল প্রার্থী