কলকাতা: বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ ছাড়া চার্জশিট নয় বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট জানাল, আপাতত কোনও বিজেপি বিধায়ককে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলা তলব করতে পারবে না পুলিশ। আগেই এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছিল আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চ। আগের সেই রায়ই বহাল রাখল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ। (Calcutta High Court)


বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে। সেই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়। বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়। লালবাজার থেকে বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে যে সমন গিয়েছিল, স্থগিতাদেশ দেওয়া হয় তাতেও। এর পর মামলা ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেও এদিন একই নির্দেশ এল কার্যত। বিজেপি বিধায়ককদের তলব করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। (National Anthem Disrespect Case)


গত বছর ডিসেম্বরে এই বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। পাওনা বকেয়ার দাবিতে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়করা বিক্ষোভ দেখান এবং ধর্নায় বসেন অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে। ওই একই সময় মাত্র ৫০ মিটার ব্যবধানে বিধানসভার সিঁড়িতে বলে পাল্টা বিক্ষোভ দেখান বিজেপি-র বিধায়করা। সরকার বিরোধী স্লোগান ওঠে সেখানে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেই সময়। 


আরও পড়ুন: Dilip Ghosh : 'এই সরকারকে ধাক্কা মেরে গঙ্গায় ফেলা উচিত', শোভনদেবের 'জন বিস্ফোরণ' মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দিলীপের


শুধু তাই নয়, অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল বিধায়করা যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইছেন, সেই সময় বিজেপি-র বিক্ষোভস্থল থেকে লাগাতার স্লোগান উড়ে আসতে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে তৃণমূলের তরফে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের বিধায়করা। ওই অভিযোগপত্র লালবাজারে পাঠিয়ে দেন স্পিকার, তাতেই কলকাতা পুলিশের তরফে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কদের তলব করা হয়। 


লালবাজারের নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এর পর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়করা। তাতে আদালতে ভর্ৎসিতও হতে হয় রাজ্যকে। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি গোটা বিষয়টিকেই 'ছেলেমানুষি' বলে উল্লেখ করেন। যখন তখন চাইলেই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করে আদালত। এর পরই সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। আগের নির্দেশই বহাল থাকল সেখানে।