সৌভিক মজুমদার, সন্দীপ সমাদ্দার ও সৌমেন চক্রবর্তী: কুড়মিদের রেল-রাস্তা রোকোকে বেআইনি ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়েছে যে, আন্দোলনের নামে এভাবে রেল-রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। এর পরই, আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিল কুড়মিরা। (Kurmi Protests)


বুধবার থেকে ফের পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল কুড়মিদের সংগঠন। তার মধ্য়েই এল কলকাতা হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ। কুড়মিদের রেল ও রাস্তা রোকোকে বেআইনি ঘোষণা করল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, আন্দোলনের নামে এভাবে রেল-রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজ্যের প্রয়োজনে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য কেন্ত্রের কাছে আবেদন করতে পারবে রাজ্য। প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্যের থেকেও এলাকার নিরাপত্তায় বাহিনীর ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া যাবে। একই সঙ্গে আরপিএফ এবং জিআরপি-কে রেলের নিরাপত্তা দেখতে হবে। এর পরই, আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিল কুড়মিরা।


আরও পড়ুন: Dengue Vaccines: অবশেষে আসতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত ডেঙ্গি ভ্যাকসিন, নভেম্বরই দেশজুড়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল !

তপশিলি উপজাতি তালিকায় অন্তর্ভুক্তি-সহ একাধিক দাবিতে, এপ্রিল মাসে কুড়মি সমাজের লাগাতার অবরোধ আন্দোলনে চরম নাকাল হন সাধারণ মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাজ্য ও জাতীয় সড়ক। রেল পরিষেবাতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। গত বছরও একই দাবিতে রেল রোকোর ডাক দিয়েছিল কুড়মি সমাজ।


সেই সময়র ২৫ সেপ্টেম্বরের অবরোধ সংক্রান্ত একটি মামলায় মঙ্গলবার ভোরে আদিবাসী কুড়মি সমাজের জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করে খড়গপুর থানার পুলিশ। এর পরই, আন্দোলনের নামে জনজীবন স্তব্ধ হওয়া রুখতে পুরুলিয়া চেম্বার অফ কমার্সে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এই রেল ও রাস্তা রোকো কর্মসূচি বেআইনি। কোনও ভাবে আন্দোলনের নামে এই ভাবে রেল রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। কোনও ভাবে নাগরিকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা যাবে না। এতে শুধু রাজ্যের চার পাঁচটি জেলায় নয়, দুর্ভোগের শিকার হন প্রতিবেশী রাজ্যের বাসিন্দারাও।


কোনও ভাবে এই নির্দেশ অমান্য করে রেল রাস্তা বন‍্ধের চেষ্টা হলে বা কোনও আইন শৃঙ্খলা সমস্যার পরিস্থিতি হলে সামাল দেওয়ার জন্য বাহিনী রাখতে হবে রাজ্যকে, নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। যদিও, বল প্রয়োগ না করে কি ভাবে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করতে হবে রাজ্যকে, নির্দেশ আদালতের।

কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলে প্রথমে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও, আদালতের নির্দেশের পর আন্দোলন তুলে নিয়েছে কুড়মিরা। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে।