সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: মেডিক্যাল কলেজ মামলায় CBI রায় নিয়ে সংঘাত। মেডিক্যাল কলেজ মামলায় সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআর খারিজ। এফআইআর খারিজ করল বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। 'আদালত থেকে সংগৃহীত নথি ফেরত দিতে হবে সিবিআইকে', নির্দেশ বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের। উল্টোদিকে এই নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। 'ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অবৈধ, তাই তার এফআইআর খারিজ হবে না, সিবিআই অবিলম্বে তদন্ত শুরু করবে', মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। সিবিআইকে দু'মাসের মধ্যে তদন্ত শেষের নির্দেশ।


রাজ্যের সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে, সংরক্ষিত আসনে ভর্তিতে দুর্নীতি নিয়ে তুমুল সংঘাত কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চের মধ্য়ে।


এর আগে...
বুধবার রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজে সংরক্ষিত আসনে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ মামলায়, CBI তদন্তে আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতের সামনে কিছু তথ্য তুলে ধরেন। এই তথ্যগুলো CBI-কে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপরই, মামলাকারীর আইনজীবীকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, অবিলম্বে এই মামলায় CBI-কে যুক্ত করতে হবে। বিচারপতি জানান, এই নির্দেশনামা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে দুপুর আড়াইটার মধ্যে CBI-কে দিতে হবে। তিনি বলেন, এ রাজ্যের পুলিশ কর্তৃপক্ষের উপর এই আদালতের কোনও আস্থা নেই। ফলে, CBI-কে তদন্তভার দেওয়া যথাযথ বলে আদালত মনে করছে।


এরপর পর্যবেক্ষণে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, এই মামলাটি চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার আবার সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। তাই রাজ্য সরকারের কাছে আমি আশা করব, এখনও পর্যন্ত CBI তদন্ত আটকাতে কত টাকা খরচ করা হয়েছে, তা তারা জানাবে। এরপরই, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের CBI তদন্তের নির্দেশ নিয়ে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। মৌখিক দৃষ্টি আকর্ষণেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের CBI তদন্তের নির্দেশের উপর, অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। এরপরও দুপুর সোয়া তিনটে নাগাদ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, CBI-কে অবিলম্বে FIR দায়ের করার নির্দেশ দেন।


তখন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন CBI-এর আধিকারিক অংশুমান সাহা। তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সমস্ত নথি নিয়ে নিন। এখনই গিয়ে FIR দায়ের করে তদন্ত শুরু করুন। তখন মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের কাছে মৌখিক ভাবে আবেদন জানিয়েছেন এবং সেই আবেদনের ভিত্তিতে CBI তদন্তের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তখন মামলাকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ দেখান, না হলে লাইভ স্ট্রিমিং দেখান। কিন্তু, তা দেখাতে পারেননি আইনজীবীরা। এরপর, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'যদি ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বা মামলার কপি না থাকে তাহলে কি সেটা গ্রহণযোগ্য?' তারপর এদিন দেখা গেল নজিরবিহীন সংঘাত।


আরও পড়ুন: এই দিন আপনার বাড়িতেও কি আসবে না জল? কী বলছে পুরসভা?