সন্দীপ সরকার, কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সটুডেন্ট কাউন্সিলের ভোটে মনোনয়নই দিতে পারল না তৃণমূল। ২০ আসনের মধ্যে ১৭টিতে জিতল নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন MCDSA। ২টি আসনে জিতেছে নির্দল প্রার্থী। এক্ষেত্রে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ।
ঠিক কী ঘটেছে?
সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সটুডেন্ট কাউন্সিলের ভোট হয়ে গেল। অথচ সেখানে মনোনয়নই দিতে পারল না তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। রাজ্যের কলেজগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদের ভোট বন্ধ রয়েছে। তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ভোট হয়ে আসছে ২০২২ থেকেই।
সোমবার সেই সটুডেন্ট কাউন্সিল গঠনেরই প্রক্রিয়া ছিল। ২২ মে, এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। কিন্তু এহেন পরিস্থিতিতে TMCP-র গলায় শোনা গেল কার্যত বিরোধীদের সুর। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, এক্ষেত্রে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম মানা হচ্ছে না। এই ভোটের বিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে জানানো হয়নি।
WBJDA-এর চিকিৎসক ও সভাপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এই যে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে, এটা কোনও কলেজ কাউন্সিলের মিটিংয়ে হয়নি। অধিকাংশ কলেজ কাউন্সিল মেম্বাররা এটা জানেন না। SOP কোনও বেরোয়নি। যেসব ফ্যাকাল্টিদের এই কমিটিতে রাখা হয়েছিল, তাঁরাও অর্ধেকে জানেন না। তাই আমরা এগুলোকে বয়কট করেছি।' ফার্স্ট ইয়ার থেকে ফাইনাল ইয়ার, মোট ৯৭০ জন চিকিৎসক পড়ুয়া এদিনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। মূল লড়াই হয় নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন MCDSA ও SUC-এর ছাত্র সংগঠন DSO-এর মধ্যে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চায়নি দু'পক্ষই। MCDSA-এর সদস্য সৌম্যদীপ দে বলেন, 'কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কোনও ছাত্র-ছাত্রী তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করে না। বরং তাদের ঘেন্না করে। তাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কাছে কোনওরকম খবর পৌঁছয়নি। SOP-সহ এই ইলেকশনের যা যা গাইডলাইন রয়েছে, কর্তৃপক্ষের যে স্বীকৃত গাইডলাইন সেটাও ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যেসব অভিযোগ করছে, সব ভিত্তিহীন।'
DSO-এর সদস্য অর্ণব তালুকদার বলেন, 'মেডিকেল কলেজে খানিকটা গণতান্ত্রিক পরিসর মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই TMCP তাদের থ্রেট কালচার, তাদের যে দুর্নীতি এসমস্ত কিছুকে ছুড়ে ফেলেছে ছাত্রছাত্রীরা। তারা কোথাও ছাত্রছাত্রীদের কাছে ঠাঁই না পেয়ে এইসব ছুতো খুঁজছে।'
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, 'এটা কোনও ছাত্রভোট নয়। ছাত্রদের দাবি মেনে কাউন্সিল গঠন হচ্ছে। আমাকে সরকার এখানে বসিয়েছে। সরকার চাইলে সরিয়ে দেবে।' ২০২২ এবং ২০২৩, পরপর দু'বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ভোট হয়েছে। ২০২৪-এ আর জি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন চলায় ভোট হয়নি।