ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: সাপে কাটা রোগীর চিকিত্‍সায় একটি ট্যাবলেটকে ঘিরে নতুন আশার আলো। ন্যাশনাল মেডিক্যালে রোগীর ওপর প্রথম ট্রায়ালে সফল এই ওষুধ। চিকিত্‍সকদের দাবি, ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেলে, অনেক সাপে কাটা রোগীরই মৃত্যু ঠেকানো যেতে পারে। 


"ভারেসপ্ল্যাডিব মিথাইল" বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, বিষাক্ত সাপে কাটার পরে রোগীকে এই ট্যাবলেট খাওয়ালে দ্রুত হারে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব হয়। ফলে অ্যান্টি স্নেক ভেনম দিয়ে চিকিৎসা শুরুর জন্য বাড়তি সময় পাওয়া যায়। 


এই ভারেসপ্ল্যাডিব মিথাইলেরই ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা, বছর ৩০-এর এক যুবকের ওপর ট্যাবলেটের প্রথম প্রয়োগ করা হয়। সূত্রের খবর, সাপে কামড়ানোর ৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। 


বুধবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। আর তাতেই ট্যাবলেটটির প্রয়োগের ব্যাপারে আশাবাদী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় জানান, আজ সুস্থ হয়ে গিয়েছেন রোগী, স্থিতিশীল।


গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরকারি হাসপাতালে পৌঁছনো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। অথচ, বিষাক্ত সাপের ছোবল খাওয়ার পর, রোগীর মূল লড়াই মূলত সময়ের সঙ্গে। 


বিষ যত রক্তে মিশে যেতে থাকে, ততই নিষ্ক্রিয় হতে থাকে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। অনেক সময় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অ্যান্টি স্নেক ভেনম দেওয়ার পরেও, শুধুমাত্র দেরির কারণে বাঁচানো সম্ভব হয় না রোগীকে। এই প্রেক্ষিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও গবেষকরা আশার আলো এই "ভারেসপ্ল্যাডিব মিথাইল" ট্যাবলেট। ট্যাবলেটটি সফল হলে, বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতালে তা রাখা যেতে পারে। 


নতুন ওষুধটি নিয়ে দেশে ৪টি হাসপাতালে গবেষণা হচ্ছে। পূর্বাঞ্চলে একমাত্র গবেষণা হচ্ছে কলকাতায়। 


চিকিত্‍সক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, এই ওষুধটা হৃদযন্ত্রের জন্য আনা হয়, ভেষজ ওষুধ, বিশ্বে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, আরও ২৫ জনের ওপর হবে এই ট্রায়াল। তার ফলাফল মূল্যায়নের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওযা হবে।