কলকাতা : টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা বিতর্ক। নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে উপাচার্যকে কটূক্তি করেছিলেন টিএমসিপি নেতা। অভিযুক্ত টিএমসিপির সেই সাধারণ সম্পাদককে ৫ বছরের জন্য সেন্সর করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। '৫ বছরের জন্য ওকে সম্পূর্ণভাবে সেন্সর করে দিতে হবে বলে হাউস থেকে উঠে আসে', জানান উপাচার্য। যদিও নতুন উপাচার্য এলে শাস্তি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হবে বলে পাল্টা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

Continues below advertisement


কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে, "এবিপি আনন্দ চ্যানেলে পুরো বিষয়টা সম্প্রচার হয়েছিল। তারপর সেটা ফেসবুক এবং বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের হাতে পৌঁছে যায়। সে ছাত্র নয় বর্তমানে। কিন্তু, সে ছাত্রনেতা। সে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেছে। সে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে ২৮ অগাস্টের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে...ঠিক তার অল্প কয়েকদিন আগে সে চূড়ান্ত খারাপ ভাষায়, ভাষাটাকে আমায় যদি কেউ রিপিট করতে বলে আমি রিপিট করতে পারব না। এতটা খারাপ ভাষা সে উপাচার্য এবং উপাচার্যর গদি, চেয়ার দুটোকেই অপমান করেছে। আমাদের শিক্ষামন্ত্রী দুটো কথা খরচা করেননি। দুটো কথা খরচা করেননি যে, একটি সবে পাস করে বেরিয়ে যাওয়া ছাত্র একজন উপাচার্যকে, তিনিও তো শিক্ষক...এত নীচে নামিয়ে কথা বলা উচিত নয়।  এভাবে অপমান করা উচিত নয়। এটুকু কথা উনি খরচা করেননি। উপরন্তু, উনি আবার যখন বক্তব্য রাখতে যান তাতে আরও কিছু খারাপ কথা অ্যাড করে দেন। যাতে বোঝাই যায়, এসব ছাত্র..এইসব এক্স স্টুডেন্টস ছাত্রনেতারা কোথা থেকে এত সাহস পাচ্ছে। ডিনদের সবার হাতে পৌঁছে যায় এবং ডিনদের তরফ থেকেই এই বিষয়টা আসে যে, এটাকে মেনে নেওয়া যাবে না। এটা কোনও ব্যক্তিকে আক্রমণ করা নয়। আমি যদি উপাচার্য না হতাম, রাস্তায় এমনি একজন প্রফেসর বা পাশের বাড়ির লোক গালাগাল দিয়েছে, বিষয়টা তো এরকম নয়। আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারে লিগ্যালি বসে আছি। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে লিডারশিপ দিচ্ছি...এটাকে মানা যাবে না। এটাকে সিন্ডিকেটে নিয়ে যেতে হবে। এই প্রস্তাবটা আসার পরে লাস্ট সিন্ডিকেটে এই বিষয়টিকে কনফিডেন্সিয়ালি একটা অ্যাজেন্ডা করা হয়। এই ধরনের জিনিসগুলো সবসময় কনফিডেন্সিয়াল থাকে। আরও ৩-৪টে কনফিডেন্সিয়াল বিষয় ছিল। সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত...একেবারে হাউস থেকে উঠে আসে।  যে, ওকে ৫ বছরের জন্য সম্পূর্ণভাবে সেন্সর করে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কোর্সে, হায়ার এডুকেশনের কোনও কিছুতে সে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। কোনও পরীক্ষায়সে বসতে পারবে না। পিএইচডি বা এমফিল কোনও কিছু করতে পারবে না ৫ বছর। চাকরির জন্য যদি আবেদন করে সেটাও করতে পারবে না শুধু এই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এটা সর্বসম্মতিক্রমে কনফার্মেশন নিয়ে পাস হয়ে যায়। "


পাল্টা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "একজন ছাত্রর প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ কোন পর্যায়ে গেলে যে এটা হতে পারে, আমি একসময় টুনটুনি বলেছিলাম, তাহলে দেখা যাচ্ছে টুনটুনি না, ভিতরে রীতিমতো একটা প্রতিহিংসাপরায়ণ বিষয় আছে। কারণ, টুনটুনি বা ময়না সুন্দর শিস দেয়। কিন্তু, এই ঠোক্কর একজন ছাত্রকে এটা ভয়াবহ... কিন্তু আমি ওই ছাত্র বা ছাত্রদের আশ্বস্ত করতে চাই এটা বলে, এই নিয়ম বা এই সিদ্ধান্ত এটা খুবই সাময়িক। যদি কোনও ছাত্রের কেরিয়ার নষ্ট হয়, আমরা সর্বতোভাবে তার পাশে আছি। নতুন যে উপাচার্য আসবেন আমরা তাঁকে অনুরোধ করব যে, এই নিয়ম প্রত্যাহার করা হোক।"