নয়াদিল্লি: নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মানছেন না বলে এবার কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল CRPF. বিদেশ যাওয়ার সময় রাহুল বিধিনিষেধ মানছেন না, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে নিচ্ছেন না, কিছু জানাচ্ছেনও না বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে সরাসরি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গেকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। (Rahul Gandhi News)
CRPF-এর তরফে রাহুল ও খড়গেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে স্বাক্ষর রয়েছে VVIP নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান সুনীল জুনের। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নিরাপত্তা ‘গুরুত্ব’ দিয়ে দেখছেন না রাহুল। অধিকাংশ সময়ই কাউকে না কিছু না জানিয়ে বিদেশ চলে যান। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় রাহুলের স্কুটার চালানোর একটি ছবি সামনে আসে। সেখানে তাঁর সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা যায়নি। (CRPF News)
সেই নিয়ে চর্চার মধ্যেই রাহুল নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মানছেন না বলে চিঠি দিল CRPF. বলা হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি ইতালি, ১২ থেকে ১৭ মার্চ ভিয়েতনাম, ১৭ থেকে ২৩ এপ্রিল দুবাই, ১১ থেকে ১৮ জুন কাতার, ২৫ জুন থেকে ৬ জুলাই লন্ডন, এবং ৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় ছিলেন রাহুল। কোনও বারই নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রোটোকল মানেননি রাহুল।
রাহুল এবং কংগ্রেসের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘রাহুল গাঁধী নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করছেন বলে জানিয়েছে CRPF. ইয়োলো বুক প্রোটোকল অনুযায়ী, উচ্চ নিরাপত্তা প্রাপ্ত ব্য়ক্তিদের গতিবিধির খুঁটিনাটি জানাতে হয়, বিদেশ সফররে কথাও জানাতে হয়, যাতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যায়। রাহুল তা করেন না’।
গাঁধী পরিবার থেকে ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধী খুন হয়েছিলেন। সেকথা মাথায় রেখেই উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়া হয় রাহুলকে। Z+ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান রাহুল, সেই সঙ্গে অ্যাডভান্সড সিকিওরিটি লিয়াজনের আওতায় তাঁকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ভাবে তৎপর থাকেন নিরাপত্তা আধিকারিক এবং গোয়েন্দারা। যাঁদের প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের জন্যই এই উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিরাপত্তায় ৫৫ জন মোতায়েন থাকেন, থাকেন ন্য়াশনাল সিকিওরিটি গার্ড কম্যান্ডোরাও। কোথাও যাওয়ার আগে সে ব্যাপারে জানাতে হয়, যাতে স্থানীয় পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ওই জায়গার সুরক্ষাব্যবস্থা খতিয়ে দেখা যায়।
রাহুল নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মানছেন না বলে এর আগেও চিঠি দেয় CRPF. ২০২২ সালে CRPF জানায়, ২০২০ থেকে ১১৩ বার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছেন রাহুল। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র উল্লেখও ছিল সেই তালিকায়। যদিও ২০২৩ সালে কংগ্রেসের তরফে রাহুলের কাশ্মীর সফরে নিরাপত্তায় খামতি থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বলা হয়, সেখানে রাহুলকে বহু মানুষের ভিড় ঘিরে ধরে। প্রায় ৩০ মিনিট নড়াচড়াই করতে পারেননি রাহুল। সম্প্রতি বিহারে রাহুল মোটর সাইকেল নিয়ে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য় বেরোলে, বহু মানুষই রাহুলের কাছে পৌঁছে যান একেবারে। এক তরুণ রাহুলকে জড়িয়েও ধরেন। মোটর সাইকেলের ভারসাম্য রাখতেও হিমশিম খেতে হয় রাহুলকে। নিরাপত্তারক্ষী বেশ দেরিতেই পৌঁছয় সেবার।
তবে এর আগে, দীর্ঘ তিন দশক বিশেষ SPG নিরাপত্তা পেতেন রাহুল, তাঁর মা সনিয়া গাঁধী, বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ২০১৯ সরকার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার সেই নিরাপত্তা তুলে নিয়ে CRPF-এর নিরাপত্তা প্রদান করে তাঁদের।