কলকাতা :   প্রয়াত বাংলা কমিকসের প্রবাদপ্রতিম স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ (Cartoonist Narayan Debnath)। চলে গেলেন হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুলের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ। গত ২৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন বেলভিউ হাসপাতালে। আজ সকালে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁর পরেই আসে দুঃসংবাদ । বাঁটুল-স্রষ্টার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার সাহিত্য ও শিল্পী মহল। তিনি চলে যাওয়ার পর, শোকপ্রকাশ করে সাহিত্যিক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বলেন, আজ সব বাঁটুল ও নন্টে-প্রেমীদের অশৌচ। 


ছোট্ট নারায়ণ দেবনাথের ভক্ত সাহিত্যিক স্মরণজিৎ (Smaranjit Chakraborty)। চাইতেন বড় হয়ে  বাঁটুল ডি গ্রেটের (‘Batul the Great’, ‘Handa Bhonda’) গল্প লিখব, একদম শিশুমনের চাহিদা যেমন। এরপর বড় হয়ে দেখাও করেছিলেন আইডলের সঙ্গে। তখন ১০১৯ সালের অক্টোবর মাস। শরীর তখনই অশক্ত হয়েছে তাঁর। কাছ থেকে মুগ্ধ হয়ে দেখেছিলেন বাঁটুল-স্রষ্টাকে। এবিপি আনন্দকে জানালেন, ফিশ ফ্রাই খেতে ভালবাসতেন, তাই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পীর বাড়ি। হয়েছিলেন স্নেহধন্য ।  সই করে বইতে নাম লিখেদিয়েছিলেন তিনি। 

আরও পড়ুন :


'কমিকস শিল্প জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি' নারায়ণ-প্রয়াণে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর


১৯২৫ সালের ২৫ নভেম্বর নারায়ণ দেবনাথের জন্ম হাওড়ার শিবপুরে। বাবার নাম হেমচন্দ্র দেবনাথ। ভালবাসতেন অ্যাডভেঞ্চারের বই পড়তে। প্রিয় লেখক ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়। গল্পের বই পড়ার জন্য বাড়িতে বকুনিও খেতেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁকে টানত ভিসুয়াল আর্ট। সেই টান থেকে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনা শুরু। কিন্তু পারিবারিক সমস্যায় পাঁচ বছরের কোর্স চার বছরের মাথায় ছেড়ে দিতে হয়। নারায়ণ দেবনাথ কমিক্স সমগ্রর দ্বিতীয় খণ্ড অনুযায়ী, মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুর দিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। স্ত্রীর নাম তারা দেবনাথ। বাবার ব্যবসা ছিল সোনার গয়নার। সেই দোকানে বসতেন নারায়ণ দেবনাথ। দোকানে বসে আঁকতেন গয়নার ডিজাইন। আঁকতেন আর দেখতেন, পাড়ার ছেলেদের কাণ্ডকারখানা। শোনা যায়, ‘হাঁদা-ভোঁদার কাণ্ডকারখানা’-য় উঠে এসেছিল পাড়ার বিচ্ছুদের সে সব ঘটনাই। 


তাঁর সৃষ্ট বাঁটুল-নন্টে-ফন্টে-হাঁদা-ভোঁদারা আজও হাসিয়ে চলেছে বাঙালিকে৷ এদিন সবাইকে কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন স্রষ্টা।