প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) এবার সিবিআইয়ের (CBI) নজরে কলকাতার চারটি সংস্থা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে দাবি, এই সংস্থাগুলি ভুয়ো। গরুপাচারের টাকা এভাবেই লেনদেন হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। এই চারটি সংস্থার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
গরুপাচার মামলায় সিবিআই নজরে কলকাতার চার সংস্থা
গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্ত ঘিরে তোলপাড় চলছে রাজ্যে। গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল (TMC) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) এবং তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। সেই মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা, সিবিআই এবং ইডি। চলছে তল্লাশি অভিযান, জিজ্ঞাসাবাদ এবং নথি সংগ্রহ।
সেই গরু পাচার মামলাতেই সিবিআই-এর নজরে কলকাতার চারটি সংস্থা। সিবিআই সূত্রে দাবি, মধ্য কলকাতার ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ওই চারটি সংস্থাই ভুয়ো। ওই চার সংস্থার মাধ্যমে গরু পাচারের কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি।
গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে দাবি, সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়েই কলকাতার চারটি ভুয়ো সংস্থার হদিশ মিলেছে। ওই চারটি সংস্থার সঙ্গে আরও ২৫-৩০টি সংস্থার যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, এক সংস্থা থেকে অন্য সংস্থা, তারপর আরও একটি সংস্থা, এইভাবে গরু পাচারের টাকা ঘোরানো হত বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। ওই সব সংস্থার সম্মুখ ভাগে ভুয়ো ডিরেক্টরদেরও রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যে নজর গোয়েন্দাদের
সিবিআই সূত্রে খবর, শেষপর্যন্ত কাদের পকেটে টাকা পৌঁছেছে, তা জানতে ওই সব সংস্থার আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খতিয়ে দেখা হবে প্রতিটি সংস্থার ব্যাঙ্কের লেনদেন।
অন্য দিকে, গরুপাচার মামলায় ধৃত এনামুল হকের তিন ভাগ্নের ৫টি সংস্থার আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য এবার সিআইডি-র নজরে। রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে দাবি, এই ৫টি সংস্থার মূলধনের থেকে বার্ষিক টার্নওভার কয়েকগুণ বেশি। এই লাভের অঙ্কে গরুপাচারের টাকা লুকিয়ে রয়েছে বলে অনুমান সিআইডি-র। সূত্রের খবর, দেখা যাচ্ছে ২০১৬-য় যে সংস্থার ৯ লক্ষ টাকা শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল, সেই সংস্থার ওই আর্থিক বছরে লাভের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি টাকায়। ২০১৭-য় এই গোষ্ঠীর চালকলের মূলধন ছিল ৪৮ লক্ষ টাকা, যেখানে বার্ষিক টার্নওভার ১৯৮ কোটিরও বেশি। খবর বিআইডি সূত্রে। এই তথ্যকেই গরুপাচার মামলার মূল হাতিয়ার করতে চাইছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা।