সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টে পিছোল অনুব্রত-মামলার শুনানি। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ অক্টোবর। ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সেই মামলারই শুনানি পিছোল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।
সুপ্রিম কোর্টে পিছোল অনুব্রত মণ্ডলের মামলার শুনানি। গত বছর ২রা মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিনই বীরভূমের ইলামবাজারে বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলাতেও সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি!
CBI সূত্রে দাবি, সাক্ষীদের বয়ানে বারবার অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে আসছে। এর আগে, এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট বলে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না CBI।
এই রক্ষাকবচের বিরোধিতা করে, অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন CBI’এর গোয়েন্দারা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ইতিমধ্যেই গরু পাচার মামলায় CBI’এর হেফাজতে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাতেও তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এই মামলার শুনানিতে এদিন, সুপ্রিম কোর্টে CBI’এর তরফে কিছুটা সময় চাওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
গরুপাচার মামলায় হাওয়ালা-যোগের দাবি সিবিআইয়ের। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বাংলাদেশের গরু পাচারকারীদের টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে এ রাজ্যে পৌঁছত। প্রোটেকশন মানি হিসেবে সেই ভাগ পৌঁছত বিএসএফ আধিকারিক, স্থানীয় পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে। অনুব্রতর বিরুদ্ধে চার্জশিটে সিবিআইয়ের আরও দাবি, মনোজ সানা নামে এক কর্মীর মাধ্যমে হাওয়ালার টাকা লেনদেন হত। মিলেছে একটি ডায়েরি।তাতে বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার, শাসকদলের নেতা ও পুলিশ অফিসারদের নাম রয়েছে। গরুপাচার মামলায় চার্জশিটে উল্লেখ সিবিআইয়ের।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের নামে আসানসোল আদালতের স্পেশাল ভেকেশন কোর্টে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। গ্রেফতারির ৫৭ দিনের মাথায় চার্জশিট দেওয়া হল। দুর্নীতি দমন আইনের একাধিক ধারার উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ পাতার এই চার্জশিটে। এর সঙ্গে ৫টি অ্যানেক্সচারও জমা দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটে অনুব্রতকে প্রভাবশালী বলে উল্লেখ করে তাঁর পরিবারের সম্পত্তির ৫৩টি দলিল এবং প্রায় ১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির অন্যান্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্যও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। পাশাপাশি, ৯৫ জন সাক্ষীর বয়ানের কপিও দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে। সেইসঙ্গে চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রত পাচারকারীদের প্রোটেকশন দিতেন ও তাঁদের জন্য সেফ প্যাসেজের ব্যবস্থা করতেন।