সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার শিয়ালদার ACJM-কে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ধৃত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য় CBI যে আবেদন করেছে তা নিয়ে শুক্রবারের মধ্য়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। তবে শুধু ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ই নয়, আরও পাঁচজনের পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে চায় সিবিআই। আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজের প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং ঘটনার দিন রাতে যে চারজন চিকিৎসক পড়ুয়া ছিলেন, তাঁদেরও পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর জন্য় আদালতে আবেদন করেছে CBI । শুক্রবার এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন বিচারক। কেন করা হয় পলিগ্রাফ টেস্ট? তাতে কি সত্যই বেরিয়ে আসে সব সত্যি কথা ? 


প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তা গদাধর চট্টোপাধ্যায় জানালেন, হিউম্যান টেন্ডেন্সই হল মিথ্য কথা বলা , ধোকা দেওয়া .... আগে এরকম ক্ষেত্রে থার্ড ডিগ্রি দেওয়া হত অর্থাৎ টর্চার। এখন মানবাধিকার কমিশনের মতো সংগঠন আছে। এখন মাসল পাওয়ার ব্যবহার করা যায় না। বরং ব্রেনকে কাজে লাগাতে হয়। সেক্ষেত্রে কিছু উপায় আছে। কিছু হিউম্যান এইড আছে, কিছু সায়েন্টিফিক এইড আছে, যেটা ব্যবহার করা হচ্ছে এখন। ভারতে তো এটা অনেক বছর ধরেই চলছে। আমেরিকায় তো এটা কম্পালসরি। সরকারি অধিকর্তা নিয়োগের সময় তাঁকে পলিগ্রাফ টেস্টের মধ্য দিয়েই যেতে হয়। ভারতেও এটা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। 


পলিগ্রাফ টেস্ট আদতে কী?  প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তা গদাধর চট্টোপাধ্যায় জানালেন,  পলিগ্রাফ হচ্ছে লাই ডিটেক্টর। এটি একটি মেশিন। মানুষের শরীর, মস্তিষ্ক এই প্রশ্নগুলি করার সময় বিভিন্ন ভাবে রেসপন্ড করে।  শরীরের ভেতরের এই স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াটি একটি গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তা উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, কোনও অপরাধী ধরুন কোনও অস্ত্র দিয়ে খুন করেছে। কী অস্ত্র দিয়ে সে কিছুতেই বলছে না, কিন্তু প্রশ্নকর্তা কয়েকটা অস্ত্রের নাম তার সামনে বললেন। যখন ঘাতক সেই অস্ত্রের কথা শুনবে, তখন তার শরীর অন্যভাবে রেসপন্ড করবে। আর তা ধরা পড়েই যাবে। এই পদ্ধতি হল  pneumogram। যেখানে respiratory movements দেখে বোঝা যায় কোনটা সত্যি বলছে, কোনটা মিথ্যে। আরেকটি পদ্ধতি হল cardiac pneumogram। সেখানে রক্তচাপ দেখে বোঝা যায় সত্যি - মিথ্যের ফারাক। এরকম আরও দুটি ধাপ আছে। এই সব পদ্ধতি ব্যবহার করে কিন্তু সত্যি বের করে আনা যায়। এছাড়াও আরও নানারকম পদ্ধতি রয়েছে । এভাবেই বেরিয়ে আসতে পারে সত্যি - মিথ্যে। 


শেষ পর্যন্ত পলিগ্রাফের অনুমতি কি মিলবে ? বৈজ্ঞানিক এই উপায়ে হবে কি অপরাধের কিনারা ? 


আরও পড়ুন : 


এবার সন্দীপ ঘোষকে আষ্টেপৃষ্টে ধরবে ইডি? বড় খবর আজই