প্রকাশ সিনহা, মুর্শিদাবাদ: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) তদন্তে একযোগে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)-বীরভূমের (Birbhum) ৬টি জায়গায় তল্লাশি চালাল সিবিআই। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়েকর বাড়ি, অফিস, আত্মীয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালালেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির (CBI Raid) আধিকারিকরা। বড়ঞার আন্দিতে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ দাসের বাড়িতে সিবিআই। তদন্তে বিভিন্ন জনের মুখে তৃণমূল বিধায়কের নাম ওঠার দাবি সিবিআই সূত্রে। তল্লাশিতে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে বলেও খবর। প্রার্থীদের তালিকা, কোন সময়ে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেই নথিও পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। প্রসঙ্গত, এমন সময়ই এই অভিযান চলেছে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই রাজ্যে এসেছেন। 


কী বললেন শাহ?
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফের মনে করালেন, 'তৃণমূলের একের পর এক নেতা এখন জেলের গরাদের পিছনে। দিদির দাদাগিরির জন্যেই একের পর এক তৃণমূল নেতা জেলে।' সঙ্গে সংযোজন, 'দিদি-ভাইপোর জুটিকে হারানোর এখন একটাই রাস্তা। বিজেপি।' শাহের কথায়, 'চাকরি চুরি হচ্ছে, মোদিজি জেলে পাঠালেই বলে অত্যাচার হচ্ছে। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের তো জেলে পাঠাতেই হবে। দিদি আর ভাইপো, আপনারা যা খুশি করে নিন, বিজেপির লড়াই থামবে না। বাংলার যুবকদের চাকরি নিয়ে দুর্নীতি করা চলবে না।' তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী চাল পাঠালেও মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের ছবি-পোস্টার লাগাচ্ছেন। শাহের কথায়, 'কলকাতা মেট্রোর জন্যও হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র সরকার।' কিন্তু বিজেপি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হিটলারের মতো শাসন' সহ্য করবে না, সেটিও স্পষ্ট বুঝিয়েছেন তিনি।  বাংলাকে সন্ত্রাস ও অনুপ্রবেশমুক্ত করার জন্যও গেরুয়াশিবিরের উপর আস্থা রাখতে আহ্বান জানান শাহ। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের (LokSabha Election 2024) আগে পঞ্চায়েত ভোটকে সেমিফাইনাল হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। গত ১২ তারিখ কালিয়াগঞ্জের সভায় ঝড় তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভা ভোটের আগে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সেদিন তিনি বলেছিলেন, 'রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ মিলে লোকসভায় দেড় লক্ষ বেশি ভোট পাব।' এদিন শাহ বলেন, 'বিধানসভায় বিজেপিকে ৭৭টি আসন জিতিয়ে দায়িত্ব বাড়িয়েছে বাংলা। ২০২৪-এ নরেন্দ্র মোদিকেই ফের প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ৩৫টিরও বেশি আসনে জেতান', বলে আহ্বান জানানও তিনি।

দুর্নীতির প্রেক্ষাপট...
নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় এর মধ্যেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতার হয়েছেন পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যও। অন্য দিকে, গরু চুরি মামলায় ধৃত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। তা ছাড়াও একাধিক যুব তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। সব মিলিয়ে এমনিতই অস্বস্তিতে শাসকদল। এবার শাহি-সফরের সময় ফের একযোগে ছয় জায়গায় তল্লাশি অভিযান সিবিআইয়ের।


আরও পড়ুন:এবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে সিবিআই তলব