সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: শুরু হয়ে গেল পরিযায়ী পাখিদের (Migratory birds) গণনার (census) কাজ। প্রতি বছরের মতো এবারও সাইবেরিয়া (Siberia) থেকে আসা পরিযায়ী পাখিদের গণনা চালু হল রায়গঞ্জের (raiganj) কুলিক বনবিতানে (kulik bird sanctuary)। কত পাখি সেখানে থাকতে পারে, তা নিয়ে গণনার কাজ শুরু হয়েছে। রায়গঞ্জ বন দফতরের পাশাপাশি  উত্তর দিনাজপুর 'পিপল ফর অ্যানিমলস', 'রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিমলস', 'হিমতা, নর্থ বেঙ্গল  ফটোগ্রাফি ক্লাব'-সহ একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মিলে এই গণনার কাজ করছে।


যা জানা গেল...
এই সবুজ বনবিতানে মূলত চারটি প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এগুলি হল - 'ওপেন বিল স্টর্ক', ইগ্রেট', 'কর্মোরেন্ট' এবং 'নাইট হেরন'। পক্ষী বিশারদদের মতে, রায়গঞ্জের কুলিক পাখিরালয়টি এশিয়ার বৃহত্তম 'ওপেন বিল স্টর্ক' বা শামুকখোল পাখির প্রজনন কেন্দ্র। ২০২১ সালে এই বনবিতানে ৭১ হাজার ৩০২টি 'ওপেন বিল স্টর্ক' দেখা যায়। তা ছাড়া, ১১ হাজার ৮৯৭ টি' ইগ্রেট' , ৭ হাজার ৬৩১টি ' কর্মোরেন্ট' এবং ৭ হাজার ৯০৯টি 'নাইট হেরন' নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়েছিল। উত্তর দিনাজপুরের মানুষ এই পাখিরালয়টি নিয়ে নানা স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু স্থানের সমস্যা সেই স্বপ্নপূরণে বড় বাধা। ফলে রায়গঞ্জ শহরের পুর এলাকার বিভিন্ন বসতবাড়ির আম, কাঁঠাল গাছগুলিতে আশ্রয় নেয় বহু পাখি। তাদের প্রজনন ও সন্তান প্রতিপালনে এগিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ। তবে কুলিক পক্ষী নিবাস একটি আবেগের নাম। তাই পাখির সংখ্যা জানতে উদগ্রীব পুরো রায়গঞ্জই।


আশার আলো গত বছরে...
গত বছর জুনের গোড়া থেকেই রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে আসতে শুরু করেছিল পরিযায়ী পাখির দল। কার্যত লকডাউনের জেরে সেবার দূষণ অনেকটাই কমে গিয়েছিল।  ফলে বন দফতরের আশা ছিল, ওই বছর রেকর্ড পরিমাণ পরিযায়ী পাখি আসবে। প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতেই তাতে খানিকটা সিলমোহর পড়ে, আসতে শুরু করে পরিযায়ী পাখিরা। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ওই পাখিরালয়ে ৯৮ হাজার ৬৩১টি পরিযায়ী পাখি এসেছিল যা কিনা তত দিন পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড ছিল। ২০২১-এও কার্যত লকডাউনের জন্য দূষণ সেভাবে বাড়েনি। ফলে আরও বেশি পরিযায়ী পাখি আসবে বলে আশা করেছিলেন বন দফতরের আধিকারিকরা। বাস্তবে হয়েছিলও তাই। মোট ৯৮ হাজার ৭৩৯ টি পাখি নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু এবার? বৃষ্টি হলেও লকডাউনের জেরে দূষণে নিয়ন্ত্রণের প্রভাব এ বছর কতটা ধরা পড়বে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ফলে পাখির সংখ্যা নিয়েও কিছুটা দোলাচলে বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয়রাও জানতে চান, শেষ পর্যন্ত বিদেশি অতিথিদের কজন এসে পৌঁছল এখানে। সেই গণনার কাজই শুরু হল এবার।


আরও পড়ুন:এসএসসি নিয়োগকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়