কলকাতা: নতুন বছরের আগে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের 'উপহার'। কর বাবদ রাজ্যগুলিকে অতিরিক্ত কিস্তি দিল কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে ৭২ হাজার ৯৬১ কোটি ২১ লক্ষ টাকা দিল কেন্দ্র। বাংলার প্রাপ্তি ৫ হাজার ৪৮৮ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। সবথেকে বেশি পেল উত্তরপ্রদেশ, প্রাপ্ত টাকার অঙ্ক ১৩ হাজার ৮৮ কোটি ৫১ লক্ষ। বাংলার থেকে বেশি পেয়েছে বিহারও। নীতীশ কুমারের রাজ্য পেল ৭ হাজার ৩৩৮ কোটি ৪৪ লক্ষ। বকেয়া চেয়ে দুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) কাছে দরবার করেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।


বকেয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক। শুধুমাত্র প্রশাসনিক দড়ি-টানাটানিই নয়। বকেয়া-তরজা রাজনৈতিক লড়াইয়ের হাতিয়ারও হয়েছে। সম্প্রতি দিল্লি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া নিয়ে সব দাবিদাওয়া সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতেই দিল্লিযাত্রা বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সেইমতো ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)-সহ বাংলার একাধিক তৃণমূল সাংসদ। মিনিট ২৫ কথা হয়েছিল, রাজ্যের দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি, সেই সাক্ষাতে সৌজন্যের ছবিও দেখা গিয়েছিল। তার পরপরই কর বাবদ রাজ্যগুলিকে অতিরিক্ত কিস্তি দিল কেন্দ্র। একাধিক রাজ্য এই টাকা পেয়েছে, তার মধ্যে বাংলার হাতে আসছে ৫ হাজার ৪৮৮ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা।


যদিও কেন্দ্র-রাজ্য বকেয়া-তরজা (Central Due) এর আগে বহুবার তেতো ছবিও দেখেছে। এর আগে চলতি বছরের ২ ও ৩ অক্টোবর ১০০ দিনের কাজের বকেয়ার দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি অভিযান ছিল তৃণমূলের। অনুমতি পাওয়া নিয়ে টানাপড়েন চলে। রামলীলা ময়দানে ধর্নার অনুমতি চেয়েও মেলেনি সেবার। তারপরে আবার দিল্লির তিনটি জায়গায় ধর্নার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তা না মেলায় কার্যত তৃণমূল-বিজেপি তুমুল তরজা হয়েছিল। অবশেষে দিল্লিতে তৃণমূলের ওই কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল এলাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেখা করেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল, পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধেও একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।


তারপর একপ্রস্থ রাজনৈতিক কর্মসূচি চলেছিল বাংলায় রাজভবনের সামনে। রাজভবনের সামনে ধর্নামঞ্চ করে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়েছিল তৃণমূল। রাজ্যপালের সঙ্গে তৃণমূলের টানাপড়েনের পরে অবশেষে রাজভবনে ফিরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেনন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তখন অভিযোগকারীদের চিঠির স্তূপ কাঁধে করে রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাকি সাংসদরা। রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছিল।


প্রতিপদেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বকেয়ার নালিশ তুলে রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে একাধিক প্রশাসনিক সভা থেকেও কেন্দ্রীয় বকেয়া নিয়ে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, তারপরেই এল এই অর্থ।


আরও পড়ুন: আঙুলের ছাপে আর নগদ নয়! প্রতারণা রুখতে বড় পদক্ষেপ