কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: রাজ্যের বেশ কয়েকটি নাট্যদলের অনুদান বন্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। দেখানো হয়েছে বিভিন্ন কারণ। সেই তালিকায় রয়েছে মেঘনাদ ভট্টাচার্য, দেবেশ চট্টোপাধ্য়ায়, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের নাট্যদলও। অনুদান বন্ধের পিছনে অনেকেই রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন।
অনুদান বন্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার: আবার কি শিল্পের ওপর নামল শাসকের কোপ? ফের কি রাজনীতির শিকার নাটক? এই প্রশ্ন মাথাচাড়া দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন নাট্যদলের পরিচালক ও বাকি সদস্যদের 'গুরু-শিষ্য পরম্পরা' নামে অনুদান দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন কারণে এরাজ্যের বেশ কয়েকটি নাট্যদলের অনুদান বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলার অন্যতম প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব মেঘনাদ ভট্টাচার্য। তাঁর দলের নাম সায়ক। ১৮ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান পাচ্ছিল। কিন্তু, এবার তা বন্ধ হয়ে গেল। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "১৫-১৬টা দলের গ্র্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে। একেকজনকে এক একটা কারণ দেখিয়েছে। কাউকে বলছে, তুমি সবল হয়ে গেছ। কাউকে বলছে সংগঠন করছ, ভাল তুমি নিজেই পারবে। আমার নিজের ধারণা, কেউ একটা তালিকা বানিয়ে দিয়েছে। অবশ্যই, বেছে বেছে করেছে আর কী এবং বেছে বেছে করার মধ্যে, দেখা যাচ্ছে ওই পছন্দ হয়নি এমন দল, হয়তো সে যে দল, তার রাজনীতির সঙ্গে আমার রাজনীতি, ও মনে করছে মিলছে না। এই সব মনে করে সব বেছে বেছে, কিছু দলকে পাঠিয়েছে।''
মেঘনাদ ভট্টাচার্যর নাট্যদলের মতো কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান বন্ধ হয়ে গেছে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়ের মেয়ে পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের নাটকের দল - মুখোমুখির। পরিচালক ও নাট্যদলের সদস্য মিলিয়ে ১৬জন ২০০৯ সাল থেকে ওই অনুদান পেয়ে আসছিলেন। পৌলমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা নাকি সেল্ফ রিলায়েন্ট আর সাসস্টেনেবল দল। বাড়ি ভাড়া করে রিহারসাল দিতে হত। আমরা যে ১৫ জনের গ্রান্ট পেতাম, ১৫টা ছেলেকে কিছু দিয়ে চালাতাম। একটা কিছু প্রোভাইড করতে পারতাম। থিয়েটারের তো এমনিতেই টাকা নেই। সেটা এরা যদি হঠাৎ বন্ধ করে দেয়, আমরা তো অথৈ জলে পড়লাম। এটা অত্যন্ত অন্যায় কাজ করল।''
কেন্দ্রীয় সরকারের 'গুরু-শিষ্য পরম্পরা' অনুদানে, নাট্যদলের 'গুরু' অর্থাৎ পরিচালক মাসে ১০ হাজার এবং 'শিষ্য' অর্থাৎ নাট্যদলের সদস্যরা পান ৬ হাজার টাকা করে। যা থেকে এবার বঞ্চিত হল, নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের দল - সংসৃতি। যার পিছনে রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন তিনি। দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, "লোকসভা ভোটের প্রাকালে যখন 'সোনার পাখি ফিরে এসো' এরকম একটা নাম দিয়ে প্রচারের জন্য একটা নাটক নির্মাণ করা হয়েছিল এবং সেটা ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা থেকে বলা হয়েছিল যে এটা করার জন্য। এখানে আমার অবশ্যই আপত্তি ছিল এবং আমি সেটা করিনি। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, যে কোথাও আমাদের একটা গ্র্যান্ট বন্ধ করে দেওয়ার একটা চেষ্টা চলছে। এটাও তাঁরা বলেছেন যে, আমি নাকি কর্পোরেট ফান্ডিং নিয়ে কাজ করি। সংসৃতি কোনওদিন কর্পোরেট ফান্ডিং নিয়ে কাজ করে না।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: West Burdwan: দিনভর প্রবল বর্ষণ, জলমগ্ন এলাকা, অন্ডাল বিমানবন্দরে বাতিল ৪টি উড়ান