প্রকাশ সিন্হা, অনির্বাণ বিশ্বাস, সমীরণ পাল, কলকাতা : যে ব্য়ক্তি চন্দন মণ্ডলের (Chandan Mondal) নাম বলেছিলেন, তিনি নিজেই চাকরির জন্য ৩৭ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন। আদালতে নাম না করে এভাবেই, প্রাক্তন CBI কর্তা উপেন বিশ্বাসের (Upen Biswas) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন চন্দনের আইনজীবী। কতটা প্রভাবশালী বোঝা যাচ্ছে। চন্দন নিয়ে পাল্টা জবাব দিলেন উপেন বিশ্বাসও। 


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় যখন তোলপাড় গোটা রাজ্য, তখনই রঞ্জনের নাম সামনে এনে বোমা ফাটিয়েছিলেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা ও মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। যে সৎ রঞ্জনের খোঁজ করতে গিয়ে, বাগদার চন্দন মণ্ডলের হদিশ পায় CBI। বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদের পর, গত শুক্রবার তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।


গ্রেফতার হতেই রঞ্জনের ক্ষোভ !

আর গ্রেফতার হতেই, বেরিয়ে এল রঞ্জনের ক্ষোভ ! নাম না করে উপেন বিশ্বাসকে নিশানা করলেন চন্দন মণ্ডল। প্রাক্তন CBI কর্তার বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে চাকরির সুপারিশের ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুললেন তিনি। মঙ্গলবারের আলিপুর জাজেস কোর্টে, চন্দন মণ্ডলের আইনজীবী আদালতে বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি, যিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার ভিত্তিতে চন্দনকে হাইকোর্টে ডাকা হয়েছিল। যিনি অভিযোগ করেছিলেন, তিনি নিজেই চাকরির জন্য ৩৭ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন। আজ চন্দনের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে মেল মারফত তার অভিযোগ জানানো হয়েছে।

চন্দনের আইনজীবী বলেন, যে ব্যক্তি আমার মক্কেলের নাম বলছেন, তাঁর অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন চন্দন। তারই প্রতিফলন এটা (গ্রেফতারি)। আমার মক্কেল বেঁচে আছেন, সেটাই আমাদের সৌভাগ্য। ওঁর ক্ষমতার বলি হতে হল আমাদের।

পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক জবাব দিয়েছেন উপেন বিশ্বাসও। প্রাক্তন সিবিআই কর্তা বলেন, এত বড় বিপ্লবী, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। ....তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এটা একটা ডট। সারা পশ্চিমবঙ্গে ভর্তি, এটা একটা ডট। তারা কতটা শক্তিশালী, যে এক্স সিবিআই ডিরেক্টের বিরদ্ধে এরকম কথা বলছেন, কতটা প্রভাবশালী। এদের কোটি কোটি টাকার জোরে কথা বলে।

গতবছর ২২ জুলাই, প্রথমবার হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে প্রকাশ্যে ছিলেন চন্দন মণ্ডল। সেদিন কিন্তু আদালতে দাঁড়িয়ে একবারও প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কোনও অভিযোগ করেননি চন্দন! কিন্তু, এখন গ্রেফতার হতেই তাঁর মুখে উপেনের বিরুদ্ধে বিষোদগার। প্রিজন ভ্য়ান থেকে বেরোনোর সময় চন্দন মণ্ডল বলেন, আমি উপেন বিশ্বাসের ষড়যন্ত্র্রের শিকার।

যদিও উপেন বিশ্বাস বলেন, বিচারক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ওখানে সিবিআই বলেছে, সহযোগিতা করেনি। আমাকে কোর্টে যখন বিচারক বললেন, আপনি যখন জানতে পারলেন, একজন এক্স আর্মি আমাকে বলেছিলেন আপনি একটা এফআইআর করলেন না কেন? তখন আমি বললাম - আমি যদি বলতাম, তাহলে একজন কনস্টেবলও আমার কথা শুনত না। আমি একজন এক্স সিবিআই অফিসার ও এক্স মন্ত্রী, আমি বললে কনস্টেবলও শুনত না, সেটা আজ আরও একবার বলছি।

সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর চন্দন মণ্ডলকে ২ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।


আরও পড়ুন ; 'এতদিন কেন ছেড়ে রেখেছিলেন?' চন্দন ইস্যুতে CBI-কে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারকের