কলকাতা: কীভাবে গ্রুপ সি (Group C) কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির জাল বিছিয়েছিলেন বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডল? চন্দনের জামিন-আবেদনের বিরোধিতায় আদালতে রিমান্ড প্রেয়ারে সিবিআইয়ের দাবি, চেন সিস্টেমে চলত নিয়োগ দুর্নীতির কারবার। অকৃতকার্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্রে সরকারি ভুয়ো মেমো নম্বর দেওয়া থাকত। রিজিওনাল কমিশনের চেয়ারপার্সনের অজান্তে তাঁর সই নকল করে সেই নিয়োগপত্র দেওয়া হত। এমনকি, নিয়ম ভেঙে সরকারি ওয়েবসাইটে নাম বা রোল নম্বর উল্লেখ না করেই অকৃতকার্য চাকরিপ্রার্থীদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হত নিয়োগপত্র। রিমান্ড প্রেয়ারে সিবিআইয়ের দাবি, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই ছিল বেআইনি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে কোটি কোটি টাকার ছড়াছড়ি।গতকাল চন্দন মণ্ডল, ওরফে বাগদার রঞ্জন সম্পর্কে বিস্ফোরক দাবি করা হয় CBI সূত্রে।৬ কোটি নয়, ১৬ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন তিনি। চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন আত্মীয়দেরও । চন্দন মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর, তাঁকে জেরা করে এই বিপুল টাকা লেনদেনের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে বলে CBI সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। FIR-এ নাম থাকা চন্দন প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের আতসকাচের তলায় ছিলেন।
CBI সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, তখনই বাগদার রঞ্জনের ব্যাঙ্কের নথি ও সাক্ষীদের বয়ান খতিয়ে দেখে, ৬ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ পাওয়া গেছিল। পরে তাঁকে জেরা করে ও ব্যাঙ্কের তথ্য ঘেটে আরও ১০ কোটি টাকার হদিশ মেলে।অর্থাৎ, সব মিলিয়ে স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় মোট ১৬ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন চন্দন।অযোগ্যদের স্কুলে চাকরি পাইয়ে দিতেই ওই টাকা তোলা হয়েছিল বলে CBI সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।
টাকা ঘুরত কীভাবে?
চন্দন মণ্ডলের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে, মঙ্গলবার আদালতে CBI-এর আইনজীবী দাবি করেন,চন্দন মণ্ডল চাকরি দেওয়ার নামে যে বিপুল টাকা নিয়েছিলেন, তা প্রথমে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতেন। পরে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিতেন চন্দন। সেই অ্যাকাউন্টের গ্রাহকদের খোঁজ চালাচ্ছে CBI। তবে শুধু চাকরি বিক্রি করা নয়, CBI-এর দাবি, নিকট আত্মীয়দেরও চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন চন্দন মণ্ডল। তাঁরাও রয়েছেন CBI-এর নজরে।