সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: নৌশাদ সিদ্দিকির (Noushad Siddique) গ্রেফতারি মামলায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) কড়া প্রশ্নের মুখে রাজ্য (West Bengal)। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এদিন প্রশ্ন করে, 'একটা ঘটনায় ৮৮ জন গ্রেফতার? প্রতিরোধমূলক গ্রেফতারির ক্ষেত্রের এতদিন ধরে ৮৮ জন জেলে? এই ধরনের ঘটনায় ১-২ জন নেতাকে হেফাজতে নিলে ঠিক আছে, কিন্তু ৮৮ জন? এই ৮৮ জনের ভূমিকা প্রমাণ করার মতো ভিডিও রেকর্ডিং আছে তো?'

২১ জানুয়ারি, দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড়ে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ISF নেতা-কর্মীরা, যার আঁচ এসে পড়ে কলকাতায়। ISF ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে, অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ধর্মতলা। গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ আরও অনেক ISF নেতা কর্মীকে। বর্তমানে জেল হেফাজতে আছেন নৌশাদ। কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন নৌশাদ সহ বাকিরা। এদিন আদালতে নৌশাদের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'একজন নেতা বা বিধায়কের এই ধরনের ভূমিকা হয়? গণতন্ত্রের নামে এই ধরনের আচরণ করা যায়? প্রতিবাদের নামে এই ধরনের অনিয়মিত আচরণ করা যায় কি? এটা একজন নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না', মন্তব্য বিচারপতি বাগচীর। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি।


এক মাস পরেও ধর্মতলার ধুন্ধুমারকাণ্ডে আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির জেলবন্দি দশা কাটল না। নিউমার্কেট থানার মামলায় নৌশাদকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন গ্রাহ্য হয়নি ঠিকই তবে জামিনের আবেদন জানাননি ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক। শাসকপক্ষের বিরুদ্ধে তুললেন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগও। ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষের পরে, শনিবার নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয় নৌশাদ সিদ্দিকিকে। শুনানিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, 'উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে জামিনের প্রয়োজন নেই। বাকিদের মতো নৌশাদ সিদ্দিকিকেও ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হোক।' সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, 'তদন্তের স্বার্থে নৌশাদকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন আছে।'

নৌশাদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, 'কী কারণে ফের পুলিশি হেফাজতের প্রয়োজন? যা জিজ্ঞাসাবাদ করার, তা তো হয়েছে। তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্স করুন। উনি বিধায়ক। রাজবন্দি করে রাখা হোক।' কাঠগড়া থেকে নৌশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'কোনও বিশেষ সুবিধা চাই না। রাজবন্দি হওয়ার প্রয়োজন নেই।' দু-পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে, ভাঙড়ের ISF বিধায়ককে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।


আরও পড়ুন: Recruitment Scam: চেন সিস্টেমে চলত নিয়োগ দুর্নীতির কারবার, দাবি সিবিআইয়ের