অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: কার্যতই বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছিল স্থানীয়দের। তবে শেষ রক্ষা হয়েছে।বন দফতরের (Forest Department) পাতা খাঁচায় ধরা পড়ল পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতা বাঘ (Alipurduar Cheetah Rescu)। মাদারিহাট ব্লকের রামঝোড়া চা বাগানের ঘটনায় স্বস্তির হাওয়া শ্রমিক মহলে। 


জানা গিয়েছে, সোমবার ভোরে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটের রামঝোড়া চা বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে চিতা বাঘটি ধরা পড়ে। বেশ কয়েকদিন ধড়েই চিতাবাঘের আনাগোনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বাগানে। বনদফতর খাঁচা বসাতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত খাচাবন্দি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে বাগানে। জলদাপাড়া বনদপ্তরের দলগাও রেঞ্জ কর্মীরা উদ্ধার করে নিয়ে যায় চিতাবাঘটিকে। বন দফতর সূত্রে খবর, স্বাস্থ পরীক্ষার পরই গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


সম্প্রতি সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। দেখা মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপ। কিছুদিন আগে কুলতলির লোকালয়েও ছড়িয়েছিল বাঘের আতঙ্ক। কুলতলি বিধানসভার অন্তর্গত মৈপিঠ কোস্টল থানার ভুবনেশ্বরী গৌড়ের চক এলাকায় জন্তুর পায়ের ছাপ ঘিরে এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। গ্রাম সংলগ্ন নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা।বন দফতরের কর্মীরা ওই এলাকায় পৌঁছে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলেন। সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে সত্যিই কি বাঘ লোকালয়ে সংলগ্ন জঙ্গলে এসেছিল ? সত্যিই কি সেগুলি বাঘের পায়ের ছাপ, না অন্য কোন বন্য পশুর পায়ের ছাপ তা খতিয়ে দেখেছিলেন বন দফতরের আধিকারিকরা ।


 শীতের শুরুতেই সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। দেখা মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর উপকূল থানার এল-প্লট শ্রীধরনগর এলাকায় ঠাকুরাইন নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিমেষেই বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা এলাকায়। খবর দেওয়া হয়েছিল বনদফতর ও পুলিশকে। পাশাপাশি জঙ্গল ও নদী তীরবর্তী লোকালয় নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। যাতে বাঘ কোনওভাবেই লোকালয়ে ঢুকতে না পারে। 


কিন্তু এ তো গেল লোকালয়ের বাঘের আতঙ্ক। তবে এই জেলারই কিছু মানুষেকেই প্রাণ হাতে করে মাছ ধরতে যেতে হয়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে সুন্দরবনে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন মৎসজীবীরা। কখনও লুকিয়ে বন দফতরের নিষেধ অমান্য করে গভীর জঙ্গলে পেটের জ্বালায়, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে, দুটো পয়সা রোজগারের আশায় পাড়ি দেয় মৎসজীবীদের দল। আর তাতেই নিমেষে সব শেষ !


আরও পড়ুন, অধীর-সহ মোট ৩৩ জন বিরোধী সাংসদ সাসপেন্ড


অপরদিকে, আরও একটি পৃথক ঘটনার সাক্ষী রইল এ রাজ্য। পাচারের আগে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছে চিতাবাঘের চামড়া। ৩ পাচারকারীকে হাতেনাতে পাকড়াও করেছে বন দফতর।ধৃতরা ওড়িশার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কালাহান্ডির চোরাশিকারীদের কাছ থেকে চিতাবাঘের চামড়া কিনেছিল পাচারকারীরা। এই চামড়া কলকাতায় ৮ লক্ষ টাকায় বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বন দফতর আগেভাগে খবর পেয়ে যাওয়ায় তা ভেস্তে যায়। এই চক্রে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।