কলকাতা : 'মেয়েকে মানসিক চাপ দিচ্ছে সিআইডি', এমন গুরুতর অভিযোগ তুলে দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের সিবিআইকে চিঠি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। গুরুতর অভিযোগের মুখে দাঁড়িয়ে তা কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। সিআইডি-র পক্ষ থেকে প্রেস বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাবতীয় অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। পাশাপাশি সারদাকাণ্ডে ধৃত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের তরফে।


ঠিক কী অভিযোগ


সারদাকাণ্ডে ধৃত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) নামে অভিযোগ করার জন্য চাপ দিয়েছে সিআইডি। তাদের পক্ষে বলা হয়েছে ৬ কোটি করে টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু-সুজন, আর সেটা হয়েছে দেবযানীর চোখের সামনে, সেটা স্বীকার না করলে আরও ন'টা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে মানসিক চাপ দেওয়া হয়েছে।'


অভিযোগ অস্বীকার সিআইডির


এডিজি সিআইডি (CID) আর রাজশেখরন এক প্রেস বিবৃতিতে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। সিআইডি একটি তদন্তকারী সংস্থা। তারা তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত করে। দেবযানী মুখোপাধ্যায় নিজে সই করে কয়েকটি চেক ইস্যু করেছিলেন। সিআইডি অফিসাররা সেটাই খতিয়ে দেখতে জেলে গিয়েছিলেন। 
জেল কর্তৃপক্ষর সামনেই দেবযানীর বয়ান রেকর্ড করে সিআইডি। কিন্তু দেবযানী তদন্তকারীদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেননি। 


তীব্র রাজনৈতিক তরজা


যে ঘটনা নিয়ে সিআইডি-র উদ্দেশে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তী। সিপিএময়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের হুঁশিয়ারি, তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় নেই। কিন্তু যিনি এসব করছেন, সেই সিআইডি অফিসার পরে ফাঁসবেন। রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) নিশানা করেছেন বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'সারদার সুবিধাভোগী', 'চোর' বলে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ ছুড়েছের তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।


হেফাজতে দেবযানী


প্রসঙ্গত, বাংলায় চলা সবকটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে আপাতত থাকতে হচ্ছে সারদার এক সময়ের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে। কারণ, সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডে দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। বাড়ি ফিরতে হলে দেবযানীকে ওই সব মামলাতেও জামিন পেতে হবে। ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে ধরা পড়েন সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়। সেই থেকে তাঁরা জেলে আছেন। 


আরও পড়ুন- 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিআইডিকে ব্যবহার', সারদাকাণ্ডে বিস্ফোরক সুজন