কলকাতা: আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর কসবার বাড়ি সিল করল সিআইডি (CID)। ওই বাড়িতে তল্লাশি করতে চান সিআইডি-র গোয়েন্দারা। গতকাল বাড়িতে কেউ না থাকায় তল্লাশি চালানো যায়নি। বাড়ি সিল করে নোটিস (Notice) টাঙানো হয়েছে।


এবিপি আনন্দে বয়ান: অন্যদিকে, আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় আইপিএস (IPS) দেবাশিস ধর এবিপি আনন্দর কাছে দাবি করেছেন, সব নথি সিআইডি-কে দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-’১৮ পর্যন্ত সম্পত্তি বেড়েছে বলে যে হিসাবের কথা বলা হচ্ছে, তা যিনি হিসাব করেছেন তিনিই বলতে পারবেন। সুদীপ্ত রায়চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী। আমি চাকরিজীবী। আমরা আলাদা মানুষ। ওঁর সঙ্গে অন্য পুলিশেরও পরিচয় আছে। এবিপি আনন্দর কাছে দাবি আইপিএস দেবাশিস ধরের। 


আমিরের ‘আমিরি’: গার্ডেনরিচের (Gardenreach) আমিরের ‘আমিরি’র নমুনায় চমকে উঠেছে বাংলা! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হানায় মিলেছে হিসাব-হীন ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা! এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলায় রাজ্যেরই IPS অফিসার দেবাশিস ধরের বাড়ি-সহ একাধিক ঠিকানায় হানা দিল রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা CID।


স্ক্যানারে আইপিএস দেবাশিস ধরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরীও। তাঁর বাড়ি থেকে সোনার গয়না ও ৩টি বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি। উদ্ধার হয়েছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। সিআইডি সূত্রের দাবি, ২০১৫ থেকে ২০১৮’র মধ্যে IPS অফিসার দেবাশিস ধরের সম্পত্তি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। 


অভিযোগ, সম্পত্তি বৃদ্ধিতে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরী। তার ভিত্তিতেই দুর্নীতি দমন আইনে মামলা রুজু হলে তদন্তে নামে CID। ভবানীভবন সূত্রের খবর, একসময় ব্যারাকপুরে কর্মরত ছিলেন IPS অফিসার দেবাশিস ধর। সেই সময় দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।


এই প্রসঙ্গে, দেবাশিস ধর এবিপি আনন্দকে জানিয়েছিলেন, CID’কে সহযোগিতা করেছি। সম্পত্তি সংক্রান্ত যা যা তথ্য চেয়েছে, সবই দেখিয়েছি। ২০২১-এর ১০ এপ্রিল, বিধানসভা ভোটের সময় কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। সেই সময় কোচবিহারের পুলিশ সুপার ছিলেন দেবাশিস ধর। শীতলকুচিকাণ্ডের পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করে সিআইডি। 


কম্পালসারি ওয়েটিং: বর্তমানে IPS দেবাশিস ধরকে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে রাখা হয়েছে। CID সূত্রে খবর, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় ভবানী ভবনেও ডাকা হতে পারে তাঁকে। এদিনই IPS দেবাশিস ধরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর সল্টলেক এবং প্রগতি ময়দান থানা এলাকার মেট্রোপলিটনে, ২টি বাড়িতে হানা দেয় CID।


 প্রায় ১০ ঘণ্টার তল্লাশিতে, ২৮০ গ্রাম সোনার গয়না ৩টি বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি। গাড়ি না নিয়ে গেলেও, মালিকানার কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছেন গোয়েন্দারা। এর আগে চিটফান্ডকাণ্ডে গ্রেফতার হন ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরী। পরে জামিন পান। এখন আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় IPS অফিসার দেবাশিস ধরের সঙ্গে তাঁর নাম ওঠায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর। পরবর্তীতে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার।