সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: বিনা অনুমতিতে প্রতিবেশীর বাড়ির ওপর দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ। আর সেই অভিযোগ ঘিরে চরমে উঠল দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ। হল বোমাবাজি (Bombing)। ঠিক কী ঘটেছিল?


দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ তুঙ্গে


বিনা অনুমতিতে প্রতিবেশীর বাড়ির ওপর দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ঘিরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শুরু। নদিয়ার শান্তিপুরের (Shantipur) টেংরিডাঙা এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি খবর এল প্রকাশ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তোলা মোবাইল ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বাড়ির ছাদ থেকে বোমা ছোড়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ২টি তাজা বোমা। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ১৮ জনকে।


এদের মধ্যে এক পক্ষের দাবি, তাদের বাড়িতে এসে তল্লাশির নামে ভাঙচুর চালায় পুলিশ। ঘটনায় গোটা এলাকা থমথমে। বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। 


ঘটনাটি ঘটে আজ সকালে। স্থানীয়দের দেওয়া মোবাইল ভিডিওয় ব্যাপক বোমাবাজির শব্দ সেই সঙ্গে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যায়। বাড়ির ছাদ থেকে বোমা ছোড়া হচ্ছে দেখা যায়। সেই সঙ্গে শোনা যায় চিৎকার চেঁচামেচি। 


এই ঘটনায় দুই পক্ষের প্রায় ১৮ জনকে শান্তিপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। একইসঙ্গে দুটো তাজা বোমা উদ্ধার যেমন হয়েছে তেমনই এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও উদ্ধার হয়েছে। 


তবে গোটা ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কীভাবে ওই এলাকায় এতগুলো বোমা এল? আগে থেকে কেন বোমা মজুত করে রাখা ছিল? শুধুমাত্র তার নিয়ে যাওয়া নিয়েই ঝামেলা না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে গোটা বিষয় নিয়েই শান্তিপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। 


গোটা ঘটনায় প্রতিক্রিয়া


এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'বোমা তো এখন কুটিরশিল্প হয়ে গেছে। কদিন আগে দেখলেন না, কাটোয়ায় অনলাইনে বোমা সাপ্লাই করা হচ্ছে। ভয়ঙ্কর অবস্থা। লজ্জা লাগে না? এ কেমন মুখ্যমন্ত্রী? এই সময়ে পুরো বাংলা আইএস, আইপিএসদের হাতে ছেড়ে, প্যারামিলিটারি মোতায়েন করা উচিত।'


শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর কথায়,  'আমি আজকে একটা রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে ছিলাম। ওখানে বসেই খবরটা পাই। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আপাতত এলাকা শান্ত আছে।'


আরও পড়ুন: Howrah News: বুধবার পর্যন্ত জারি ১৪৪ ধারা, থমথমে পাঁচলা, জগৎবল্লভপুর, মোতায়েন পুলিশ, বজ্র ভ্যান


প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, 'এটা আজ আর কোনও নতুন ঘটনা নয়। মুখ্যমন্ত্রীর বোমা-বন্ধুক উদ্ধার করার নির্দেশ দেওয়ার পরও বোমা ও বন্দুকের শ্রীবৃদ্ধি তো গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ প্রতি মুহূর্তে পরিলক্ষিত করছে। সামান্য তার দেওয়া বা জল তোলা নিয়ে দু পক্ষে যদি এত বোমাবাজি শুরু হয় তার মানে কীভাবে যে বোমা উদ্ধার হয়েছে তাতে একটা বিরাট প্রশ্নচিহ্ন রয়েই গেল। আর মানুষের মধ্য়ে ভয় ডর, প্রশাসনিক ভীতি কিছুই নেই।'