নয়াদিল্লি: ১২ জুন। প্রত্যেক বছর এই দিনটি 'বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস' (World Day Against Child Labour) হিসেবে পালিত হয়। দিনটির লক্ষ্য শিশু শ্রমিকদের (child labourers) শোষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোনও শিশুকে শিশুশ্রমিকের পর্যায়ে তখনই ফেলা হয় যখন তাদের কাজ করার বয়স না হওয়া সত্ত্বেও কাজ করানো হয় বা কোনও অস্বাস্থ্যকর কাজে তাঁদের নিয়োগ করা হয় যা তাঁদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করে এমনকী পড়াশোনা ও শিক্ষারও ক্ষতি করে। এই অভ্যাসটি দূর করার জন্য আরও কী করা দরকার তার উপরও দিনটি ফোকাস করে। শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সরকার ও সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোকে একত্রিত করাই এই বিশেষ দিনের লক্ষ্য।


'বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস'-এর ইতিহাস


২০০২ সালে সর্বপ্রথম 'বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস' পালন করা শুরু করে 'ইন্টারন্যাশনাল লেবর অর্গানাইজেশন' (International Labour Organization)। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল শিশু শ্রমের শিকার হওয়া খুদেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা। দিনটি এই অনুশীলনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। ILO কনভেনশন নং ১৮২, যা শিশু শ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপের সঙ্গে ও ILO কনভেনশন নং. ১৩৮, যেটি কর্মসংস্থানের জন্য ন্যূনতম বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত, এই দুই প্রধান ইস্যু নিয়ে কাজ করা হয়।


এই বছরের থিম কী?


এই বছর এই বিশেষ দিনের থিম হচ্ছে 'ইউনিভার্সাল সোশ্যাল প্রোটেকশন টু এন্ড চাইল্ড লেবার'। দিনটি মূলত সোশ্যাল প্রোটেকশন স্কিমস ও সিস্টেমে বিনিয়োগের বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলে যা সমাজে শিশুদের সুরক্ষার দিকে নিশ্চিত করে।


শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে প্রচারের ফলে শেষ দুই দশকে তাতে বেশ অগ্রগতি হলেও সেই গতি ক্রমশ কমে গেছে। সময়ের সঙ্গে গতি কমেছে এবং কখনও বন্ধও হয়েছে। বিশেষত ২০১৬ থেকে ২০২০ এই সময়ে। শ্রমিক হিসেবে প্রায় ১৬০ মিলিয়নের বেশি সংখ্যক শিশু কাজ করে এখনও। তাদের মধ্যে ৫ বছর বয়সী শিশুও আছে।


বিশেষত্ব


'বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস'-এর প্রচারাভিযান স্বতন্ত্র সরকারগুলির পাশাপাশি সুশীল সমাজ, সামাজিক অংশীদার এবং অন্যান্যদের আরও সমর্থন পাওয়ার সুযোগ দেয়। 


ইউনাইটেড নেশনসের মতে, ২০২০ সালের শুরুর দিকে পাঁচ বছর বয়সী ১০ জন শিশুর মধ্যে অন্তত একজন বিশ্বজুড়ে শ্রমের কাজে জড়িত ছিল। যার মোট করলে দাঁড়ায় প্রায় ১৬০ মিলিয়ন, তাদের মধ্যে ৯৭ মিলিয়ন ছেলে ও ৬৩ মিলিয়ন মেয়ে। আফ্রিকায় শিশুশ্রমিকের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৭২ মিলিয়ন।


আরও পড়ুন: Morning Headaches: মাথার যন্ত্রণা নিয়ে ঘুম ভাঙছে? কোন অসুখের লক্ষণ?


এই দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন প্রচারাভিযান ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সবের লক্ষ্য এই বড় বিপদ মোকাবেলা করার জন্য সমাধান বের করা এবং বিশ্বজুড়ে শিশুদের একটি সুখী এবং স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করা।