কলকাতা: রামনবমীর অশান্তি নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় বিজেপি। বললেন, 'এলাকা অশান্ত করতে এসেছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। এটা খায় নাকি মাথায় দেয়? এটা কাঁচালঙ্কা নাকি লবডঙ্কা? সব ব্যাপারে হিউম্যান রাইটস, চাইল্ড কমিশন।' একই সঙ্গে পাশে দাঁড়ালেন পুলিশেরও। তাঁর মতে, 'প্রথম দিকে ওরা এত অস্ত্র নিয়ে বেরিয়েছিল যে পুলিশ যদি দু'পক্ষকে আটকাত তা হলে অনেকে গুলিতে মারা যেতে পারত। সেই জন্য ১ ঘণ্টা ওরা ট্যাক্টফুলি খেলেছে।'


আর কী বললেন?
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'মোটেও কোনও গুরুতর বিষয় নয়। একেবারে স্থানীয় স্তরে গোলমাল হয়েছিল। আমার ধারণা বিজেপি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে করেছে। মাসখানেক আগেই ওরা এটি পরিকল্পনা করেছিল। বিজেপি দফতর থেকেই এই পরিকল্পনা করা হয়। দেখুন ওরা কী বিবৃতি দেয়।' তাঁর আরও অভিযোগ, মুঙ্গের বাহিনী দিয়ে এলাকা অশান্ত করার চেষ্টা হয়েছিল। ধর্মীয় মিছিলে অস্ত্র কেন? এই প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, 'আমাদের এখানকার মানুষ কখনও অশান্তি করেন না। এটি তাঁদের সংস্কৃতিতে নেই।' এদিকে এদিনই আবার বিরোধী দলনেতার দায়ের করা এই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।


কী পর্যবেক্ষণ?
'কে বা কারা অশান্তিতে উস্কানি দিয়েছে বা লাভবান হয়েছে তা জানা রাজ্য পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে তদন্ত প্রয়োজন', মামলায় পর্যবেক্ষণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের। এতেই শেষ নয়। তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, পুলিশি রিপোর্টে স্পষ্ট যে ব্যাপক অশান্তি হয়েছে। বছরের পর বছর একই ঘটনা ঘটছে, কীভাবে আটকানো সম্ভব?' তাঁর মতে, 'বাইরে থেকে আক্রমণ-অধিগ্রহণের চেষ্টা হলে ইন্টারনেট বন্ধ হয়। মিছিলে অশান্তি হলে ইন্টারনেট বন্ধ হয় না। বোমাবাজি, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, অশান্তির ঘটনা মানুষকে উদ্বিগ্ন করে।' হাওড়ার সিপির রিপোর্ট নিয়েও পর্যবেক্ষণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির। তাঁর কথায়, 'সিপি রিপোর্টে বলছেন, মিছিলের অনুমতি ছিল না। কিন্তু অনুমতি সংক্রান্ত সব নথিপত্র দেখতে পাচ্ছি। এতেই তদন্তের গতি প্রকৃতি স্পষ্ট।' তাঁর প্রশ্ন, 'রিপোর্ট লেখা আছে মারাত্মক অস্ত্র। কী এই মারাত্মক অস্ত্র?' রাজ্য জানিয়েছিল, হকি স্টিক, তলোয়ার, আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গিয়েছে। 'এই ধরনের গন্ডগোল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে', এর পরই পর্যবেক্ষণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির। সঙ্গে আরও প্রশ্ন, 'আদালতের আগের নির্দেশও কার্যকর হয়নি কেন? পুলিশের অদক্ষতা? গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা? নাকি অন্য কিছু?' একই সঙ্গে হনুমানজয়ন্তীর মিছিলের প্রসঙ্গও আসে। রাজ্য়ের তরফে দাবি, ওই মিছিল শান্তিপূর্ণ ছিল। বলা হয়, হুগলি গ্রামীণে একটি শোভাযাত্রায় রুট সংক্রান্ত নির্দেশিকা সামান্য অমান্য করেছে। বাকি কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি। ৩ কোম্পানি সিআরপিএফ মোতায়েন ছিল।


আরও পড়ুন:'আই লাভ কেওড়াতলা মহাশ্মশান'! মুখ্যমন্ত্রী বললেন 'মিথ্যে কথা'