শান্তিনিকেতন, বীরভূম: বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নয়, এবার পৌষ মেলার উদ্বোধনে রাজ্য সরকার। শান্তিনিকেতনে (Shantinikatan) পৌষ মেলার (Poush Mela) ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।


কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
এদিন পৌষমেলা উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই জায়গা কেউ কলুষিত করুক চাই না। কোনও স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে বিশ্বভারতী চালালে হবে না। আশ্রমিক থেকে পড়ুয়া সকলকেই সম্মান দিতে হবে।' বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পৌষ মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


রবিবার থেকে শান্তিনিকেতনে শুরু হল পৌষমেলা। মেলা চলবে পাঁচ দিন। সব মতানৈক্য কাটিয়ে মেলা শুরু হতেই জেলায় খুশির হাওয়া। পৌষমেলা ঘিরে সাজসাজ রব শুরু হয়েছে। এবার বিশ্বভারতী এই মেলার আয়োজন করছে না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়ে দিয়েছিল এবার পৌষমেলা হবে না। তারপরেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। তখনৎ রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে রাজ্যের তরফেই এবার পৌষমেলা আয়োজন করা হবে। সেই মতোই এদিন শুরু হয়েছে পৌষমেলা।


কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই দূষণমুক্ত মেলা আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর জেলা প্রশাসন। পৌষমেলার সঙ্গে পৌষ উৎসব শুরু হয় ৭ই পৌষ ভোরে। গৌরপ্রাঙ্গনে বৈতালিকের মধ্যে দিয়ে। সকাল ৬টায় শান্তিনিকেতন গৃহে সানাই, ছাতিমতলায় ৭টায় উপাসনা। বাউল গানের মধ্যে দিয়ে মেলা প্রাঙ্গনে  পৌষ মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে সকাল ১১টা নাগাদ। ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আম্রকুঞ্জে আশ্রমিক সঙ্ঘের অনুষ্ঠান রয়েছে দুপুর ৩টে নাগাদয সাড়ে তিনটে নাগাদ আলাপিনী মহিলা সমিতির অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ছাতিমতলা এবং উদয়নে আলোকসজ্জা। রাত্র ১০টায় মেলাপ্রাঙ্গনে যাত্রার ব্যবস্থা করা হয়েছে।


রাজ্যের তরফে পৌষমেলার আয়োজন নিয়েও বিস্তর টানাপড়েন চলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের মধ্যে। প্রথমে মেলার মাঠ নিয়ে টানাপড়েন হয়। বিশ্বভারতীর তরফে মাঠ দেওয়ার জন্য একাধিক শর্ত আরোপ করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পাল্টা চিঠি দিয়ে প্রশাসন জানিয়েছিল তাদের পক্ষে এত শর্ত মেনে চলা সম্ভব নয়। পরে অন্যত্র রাজ্য প্রশাসনের তরফে মেলার আয়োজন হয়েছে। 


রাজ্যের সঙ্গে বিশ্বভারতীয় কর্তৃপক্ষের টানাপড়েন নতুন নয়। অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি থেকে শুরু করে ফলক ঘিরে বারবার দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। এর আগে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকার সময়েও রাজ্যের সঙ্গে চরমে পৌঁছেছিল দ্বন্দ্ব। পরে উপাচার্যের পদ থেকে সরেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। দায়িত্বের হাতবদলের পরেও রাজ্য প্রশাসন ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্বের ছবি পাল্টাল না।


আরও পড়ুন: 'টেটের প্রশ্ন বিক্রি হয়েছে...কারও চাকরি হবে না' বিস্ফোরক শুভেন্দু