কলকাতা: শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে খোদ প্রচারে নেমেছেন মমতা। কোচবিহারের সভায় এদিনই বিরোধীদের তুলোধনা করেছেন। 'দুষ্টুমি' করলে কান মুলতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটের রণংদেহি ভঙ্গিমার মধ্যেই তাঁকে পাওয়া গেল পুরনো সেই চিরাচরিত মেজাজেও। ভোটপ্রচারের ফাঁকে জলপাইগুড়ির মালবাজারের চালসায় চায়ের দোকানেও ঢুকে পড়লেন তিনি।


গোটা প্রক্রিয়া নিজে হাতেই করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে কাগজের কাপ সাজিয়ে রাখেন। তারপর নিজে হাতে কেটলি করে কাগজের কাপে চা ঢালেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ভূমিকা খুব চেনা। অন্তত বাংলার বাসিন্দাদের কাছে তো বটেই। এর আগেও নানা সময় জেলা সফরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন তিনি। কখনও তাঁকে চা বানাতে দেখা গিয়েছে। কখনও তাঁকে দেখা গিয়েছে চপ ভাজতে। কখনও আবার লেচিও বেলেছেন তিনি।


কবে কোথায়:
২০১৯ সাল সম্ভবত, সেবার দিঘা সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই রাস্তার পাশে একটি দোকানে থেমে গিয়েছিলেন। সবার জন্য চা করতে বলেছিলেন। তারপরে নিজেই ঢুকে গিয়েছিলেন দোকানে। ফুটন্ত চা নাড়িয়ে, তারপরে চা ছেঁকে কাপে ঢেলে দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ২০২২ সালে ঝাড়গ্রাম সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে দেখা গিয়েছিল এমনই রূপে। বেলপাহাড়ি থেকে ফেরার পথে রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে ভাজা হচ্ছিল চপও। হঠাৎ করেই নিজেই চপ ভাজতে শুরু করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, কাগজে মুড়িয়ে লোকজনের হাতে চপ তুলে দিয়ে টুকিটাকি কুশল সংবাদও নিতে দেখা যায় তাঁকে।  চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বীরভূম সফরে গিয়ে সোনাঝুরিতে গিয়েছিলেন মমতা, সেখানে তাঁকে একটি দোকানে নিজে হাতে চা বানাতে দেখা যায়। তারপর এদিনের মতোই কাপে চা ঢেলে হাতে হাতে বিলিও করেছিলেন তিনি। 


মোমোও বানিয়েছিলেন:
শুধু চা-চপ নয়। মোমোও বানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। গতবছর জুলাই মাসে দার্জিলিং সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রাতভ্রমণে বেরিয়ে রিচমন্ড হিল থেকে সিংমারিতে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা পর্যন্ত হেঁটে যান। তারপরে ফেরার পথে হঠাৎ করেই ঢুকে পড়েন পাশের একটি দোকানে। সেখানে মোমো তৈরি হচ্ছিল। এক মহিলার কাছে থেকে রুটি-বেলনা নিয়ে নিজেই বসে পড়েছিলেন মোমো তৈরিতে। লেচি কাটেন, তারপরে নিজেও পুর দিয়ে তৈরি করেছিলেন মোমো। ওই সফরেই পাহাড়ের রাস্তায় ফুচকা তৈরি করে বাচ্চাদের খাওয়াতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। 




ভিনরাজ্যেও এক মেজাজ:
চলতি বছরেই ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রিপুরা সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সঙ্গী ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে সন্ধেয় আগরতলার রাস্তাঘাটে ঘুরে বেরিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল অন্য মেজাজে। শিঙাড়া-কচুরির দোকানে যান তিনি। প্রথমে দেখেন প্রক্রিয়াটা, তারপরেই নিজেই ময়দা বেলে লেচি কেটে আলুর পুর ভরতে থাকেন। শিঙাড়া তৈরি সেরেই পাশের দোকানেও ঢুঁ মারেন তিনি। সেখানে তাঁকে পান সাজাতেও দেখা যায়।


বারংবারই অভিনব পদ্ধতিতে জনসংযোগ করতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। সাধারণ মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে কখনও চা, কখনও চপ আবার কখনও মোমো তৈরি- নানা ভূমিকায় দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।


আরও পড়ুন: কতবার দুধ ফোটান? পদ্ধতি কি ঠিক? পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে না তো?