ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) ঐতিহ্যবাহী কোপাই নদী বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। নদীর তীর ও নদীবক্ষে উঠছে কংক্রিটের পিলার। পরিদর্শনের পরে নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন বীরভূমের জেলাশাসক। অনুমতি খতিয়ে দেখা হবে, জানিয়েছেন তিনি।
কোপাই নদী বেদখলের অভিযোগ: নদীবক্ষে মাথা তুলছে কংক্রিটের পিলার। নদীর তীরেও চলছে কংক্রিটের পিলার নির্মাণ। প্রায় ৩৮টি বড় কংক্রিটের পিলার গাঁথা হয়েছে নদীর তীর ও নদীবক্ষে। গাঁথা হয়েছে ইটের বড় পাঁচিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবেই বীরভূমের শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য়বাহী কোপাই নদী দখল করে উঠছে কংক্রিটের নির্মাণ। বিষয়টি সামনে আসতেই মঙ্গলবার নদী পরিদর্শনে আসেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় সহ সরকারি আধিকারিকরা। ঘুরে দেখার পর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তাঁরা।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু লেখাতেই কোপাই নদীর উল্লেখ রয়েছে। শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের অধীনে এই নদী। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, মিষ্টি জলের নদীর তীর চারণভূমি। তীরের ৫০০ মিটার পর্যন্ত কোনও নির্মাণ করা যায় না৷ কিন্তু, সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঐতিহ্য়বাহী কোপাই নদীর তীর ও নদীবক্ষে মাথা তুলেছে কংক্রিটের নির্মাণ। একটি বেসরকারি সংস্থা সেখানে ৫টি মন্দির তৈরি করবে। মন্দিরের পাশে তৈরি করা হবে কটেজ। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “এখানে যেটা আমরা পেপারস তার সঙ্গে সরেজমিন যে দেখলাম। কোপাই নদী আগে যেভাবে যেত সেখান থেকে সরে এসেছে। কোপাই নদীর কাছে দাবি করা হয়েছে কিছু রায়তি প্লট আছে। সেখানে তারা নির্মাণ শুরু করেছে। রায়তি প্লট আমরা পর্যালোচনা করে দেখব যে রায়তি প্লট আছে কিনা।’’
পরিবেশপ্রেমীদের আশঙ্কা উপযুক্ত ব্য়বস্থা নেওয়া না হলে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়ার ঐতিহ্যবাহী কোপাই নদী মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “ডিএম সাহেবকে যেতে হচ্ছে কেন। উনি খবর পাচ্ছেন না যারা ওখানে তোলামূলের লোকেরা একটু একটু করে জায়গা দখল করছে। ওরা জঙ্গল দখল করে নিয়ে কয়লাখনি করছে। নদী দখল করে নিয়ে বাড়ি করছে। বিভিন্ন জায়গা দখল করে নিচ্ছে। এতো দখলের রাজনীতি চলছে। ডিএম সাহেব আর কত জায়গায় ছুটবেন।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্য়ায় বলেন, “সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিএম নিজে গেছেন। আমরা একে সাধুবাদ জানাই। বিজেপি তো সব জায়গাতেই তৃণমূলের মদত দেখে। ডিএম যেকানে রাজ্য় সরকারের হয়ে গেছেন। আর কী বলার থাকতে পারে। কোনও মদত নেই।’’
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: সন্দেশখালিকাণ্ডে ঘটনাস্থলে দ্রুত সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ আদালত