আবীর দত্ত, কলকাতা: টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়া। এখনও পর্যন্ত দুটি ফ্ল্যাটে (flat) অভিযান (raid) চালিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি ইডি (ED) সূত্রে। সঙ্গে বিপুল সোনা (gold)। যদিও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, জেরায় তিনি বার বার দাবি করেছেন তিনি নির্দোষ। টাকার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। কিছুই করেননি। 


কী পরিস্থিতি পার্থ-অর্পিতার?
এই মুহূর্ত সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দফতরে আলাদা লক আপে রয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, গত কাল গভীর রাত পর্যন্ত জেগে ছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী। পরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোন। তবে স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়াই করেছেন। দীর্ঘ জেরা পর্বে পার্থ খেয়েছেন ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুট আর গ্রিন টি। পরে ভাত, রুটি ও বেগুনের তরকারি খেয়ে ঘুমোন। তবে অর্পিতাকে কিছুটা বিধ্বস্ত দেখিয়েছে বলে খবর। জেরা চলাকালীন বার দুয়েক কেঁদেছেনও। সূত্রের খবর, বার বার মা ও এক আত্মীয়ের কথা বলেছেন। আজও তাঁদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 


আর কত?
তবে যে হারে টাকা উদ্ধার হচ্ছে তাতে একটি প্রশ্ন ফের জোরাল-- এগুলি কি স্রেফ হিমশৈলের চূড়া? আরও কত টাকা লুকোনো আছে? আরও কত উদ্ধার হবে? টালিগঞ্জের মতো বেলঘরিয়াতেও দেখা গিয়েছে, ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে রাশি রাশি ২ হাজার এবং পাঁচশোর নোটের বান্ডিল। এমনকী শৌচাগারেও মেলে টাকা। এতদিন এরকম দৃশ্য সাধারণত বলিউডের ছবিতে দেখা যেত। কিন্তু এ বার চিত্রনাট্যকে হার মানাচ্ছে বাস্তব। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে, ইডি এক একটা ফ্ল্যাটে হানা দিচ্ছে, আর উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কী ভাবে এই টাকা অর্পিতার কাছে এল দেখা? কে টাকা রাখতে দিয়েছিলেন? ফ্ল্যাট কি টাকা লুকনোর জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হত? যকের ধনের আসল মালিক কে? মূল চাঁই কে? কানে টান পড়ার পর এ বার কি মাথাও আসবে? 
এবিপি আনন্দই প্রথম বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট খুঁজে বার করে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত- ১৮ ঘণ্টা তল্লাশির পর সেই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা ও কেজি কেজি সোনার বাট। তারই সঙ্গে সঙ্গে রাশি রাশি দলিল। ইডি সূত্রে দাবি, টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটের মতো এই ফ্ল্যাটেও একটি ঘরে অনেক ওয়ার্ড্রোব রয়েছে। সেই ওয়ার্ড্রোবগুলি খুলতেই দেখা যায়, তার ভিতরে থরে থরে সাজানো দু’হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল।  ইডি সূত্রে দাবি, একটি-দু’টি ওয়ার্ড্রোব নয়, সবক’টি ওয়ার্ড্রোবেই ঠাসা ছিল নগদ টাকা! টাকা গুনতে নিয়ে আসা হয় অত্যাধুনিক মেশিন। ইডি সূত্রে খবর, এদিনও সিজিও কম্পপ্লেক্সে ইডি-র দফতরে ওএসডি-কে তলব করা হয়েছে। ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে। 


আরও পড়ুন:'অর্পিতার এই আবাসনে আসতেন সৌগত রায়ও' বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ