আশাবুল হোসেন, দীপক ঘোষ ও অনির্বাণ বিশ্বাস,কলকাতা : সংঘাতে ইতি। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) বন্ধু বলে সম্বোধন করলেন মদন মিত্র (Madan Mitra)। বললেন, ভুল করে থাকলে, তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে মদনের মন্তব্য, শ্রীরামপুরের তৃণমূল (TMC) সাংসদ ভুল করলে, তাঁর বলার অধিকার আছে। দলের কড়া বার্তার জেরেই কি মদন মিত্রর সুর নরম? জল্পনা তুঙ্গে। এই নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।


তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলীয় নেতাদের বাকযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে  দু’দিন আগেই  বলেছিলেন, কিছু বলার থাকলে দলের ভিতরে বলুন। এর পাল্টা মদন মিত্র বলেছিলেন, উনি বললেন দলের ভিতরে বলতে হবে। কিন্তু, কাকে বলব? কোথায় বলব? কোথায় পাওয়া যাবে?


এদিন সংঘাতে যবনিকা টানতে মদন মিত্র বলেছেন, আমাকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শৃঙ্খলারক্ষা করতে শেখালেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় দুঃখ পেলে, আমি দুঃখিত।


এভাবে একদিনে সুর বদল করলেন মদন মিত্র। কটাক্ষের বদলে তাঁর গলায় বন্ধুত্বের বার্তা। এভাবে সংঘাতে ইতি টানলেন মদন মিত্র।


দলের কড়া বার্তার জেরেই কি শেষপর্যন্ত সুর নরম করলেন কামারহাটির বিধায়ক?শনিবার কল্যাণ-কুণাল বাগযুদ্ধের আবহে, তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সবপক্ষকে বাইরে মুখ না খোলার বার্তা দেন। তা নিয়ে শনিবার এবং রবিবার, পরপর দু’দিন কটাক্ষ করেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।


সোমবার বিকেলে মদন মিত্র ফেসবুক লাইভে কী বলবেন, তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে জল্পনা ছড়ায়।কিন্তু, সব জল্পনায় জল ঢেলে সন্ধির বার্তা শোনা গেল কামারহাটির কালারফুল বিধায়কের গলায়।বললেন, আমাকে হাত ধরে যিনি রাজনীতিতে এনেছেন, তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আমাদের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান, মহাসচিব। পার্থ চট্টোপাধ্যায়  সম্পর্কে কোনও বাজে কথা, কোনও কটূক্তি করা আমার সম্ভব নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমাকে ফোন করেছিলেন।  তিনি আমাকে ফোন করবেন না তো কি দিলীপ ঘোষকে ফোন করবেন? আমি তো দলের বাইরে নই। আমার কথায়, আমার ব্যবহারে যদি মনে হয় আমি কোথাও ভুল করে থাকি, তা হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।


তৃণমূলের অন্দরে এই বিতর্ক সম্পর্কে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী বলেছেন, ওদের পার্টিতে কোন গণতন্ত্র আছে নাকি। একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। ওই পার্টিতে কেউ কিছু বলতে পারে নাকি!


কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ও। 


অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ডহারবার মডেল নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলে বিতর্কে জড়ান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন কল্যাণকে নিয়েও মুখ খুলেছেন মদন মিত্র। বললেন, আমার মনে আছে, সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় যখন সিঙ্গুরে থাকতাম, প্রতিদিন মমতা বলতেন, যাও তো কল্যাণ, কী অবস্থা? কল্যাণ সঙ্গে সঙ্গে হাইকোর্টে দৌড়ত, আমি কল্যাণের দালাল নয়, কোনও ভুল হলে আমার অধিকার আছে বলার, আমি ওর বন্ধু।


মমতা-অভিষেকের প্রশংসা করতে গিয়ে এদিন গান্ধীজি-নেতাজিকে টেনে এনেছেন মদন মিত্র।


তাহলে তৃণমূলের অন্দরে বিতর্কের অবসান ঘটল? উত্তর দেবে সময়ই।