কলকাতা : সাগরদিঘি নির্বাচনের পর সামবাদিক বৈঠকের মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর এক বক্তব্য। অধীর চৌধুরীর প্রয়াত মেয়েকে নিয়ে মন্তব্য ব্যক্তি-আক্রমণ হিসেবে জানিয়েই কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন। তারপর রাত-বিরেতে পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার, সঙ্গে সেদিনই জামিন। যে বিতর্কের মাঝে উঠে আসে এক বইয়ের কথাও। সবমিলিয়ে ব্যক্তি-আক্রমণের বৃত্তে গত কদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। এর মাঝেই ব্যক্তি-আক্রমণের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক লড়াইয়ের ডাক দিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Choudhury)। ব্যক্তি-আক্রমণ নয়। লড়াই হবে রাজনৈতিক। দলীয় নেতা কৌস্তভ বাগচীকে বার্তা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। পাশাপাশি ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করায় ফের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।


ব্যক্তিগত লড়াই নয়, রাজনৈতিক লড়াই হবে


অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'জীবনে কখনও কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে রাজনীতি করিনি। আজও করছি না। আগামীদিনেও করব না। দিদির সঙ্গে আমার লড়াই রাজনৈতিক লড়াই। কিন্তু প্রশ্ন হল, সম্মানটা একতরফা হয় না। মর্যাদা একতরফা হয় না। এটা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বোঝা উচিত। তিনি নিজে নোংরা ঘেঁটেছেন। ফলে তাঁকে তো দুর্গন্ধের শিকার হতেই হবে। পাশাপাশি আমাদের পার্টির নেতা কৌস্তভ বাগচী যাঁকে স্নেহ করি, প্রথম দিনই বলেছি, কৌস্তভ তুমি আমার ভাইয়ের মতো। এইসব নিয়ে বেশি কথাবার্তা বলা সমীচীন নয়। সে আমাকে জানিয়েছে, আপনাকে অপমান করেছে, সেটা আমি সহ্য করতে পারিনি, তাই আপনার কাছে ক্ষমা চাক, সেই দাবি করেছি। ওকে বলেছি এসব দাবি করতে বলিনি, যা লড়াই হবে রাস্তায় হবে। রাজনৈতিক লড়াই হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই হবে। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লড়াই হবে না।'


এর মাঝেই কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi) জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাছে ক্ষমা চান, তাহলে তিনিও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন। অবশ্য তাঁর আগে যে বইয়ের পিডিএফ দেখিয়ে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন, সেই প্রাক্তন আমলা দীপক ঘোষের (Dipak Ghosh) নদিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন কৌস্তভ বাগচী। পাশাপাশি গোটা বাংলায় বইটি যাতে পৌঁছে যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। 


এদিকে, এবার নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। কৌস্তভের দাবি, তাঁর ওপর হামলা হতে পারে বলে এক তৃণমূল কর্মী জানান। এরপর গতকাল রাতে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনারকে ই-মেল করে নিরাপত্তা চান কৌস্তভ। কংগ্রেস নেতার দাবি, রাতে তাঁর ব্যারাকপুরের  বাড়ির সামনে ঘুরে যায় পুলিশ। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। ব্যারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান উত্তম দাসের দাবি, গোটাটাই নাটক। এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চাইলে পেয়ে যাবেন কৌস্তভ।


আরও পড়ুন- সরকারি কর্মীদের ডিএ-ধর্নামঞ্চে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী, ধর্মঘট সমর্থনের বার্তা