সুকান্ত মজুমদার ও দীপক ঘোষ, কলকাতা : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Abhishek Banerjee) বারবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তলবে যখন প্রকাশ্য়ে প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হচ্ছে কংগ্রেসের (Congress) কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তখন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে ঢিলেমির প্রতিবাদে পথে নামল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সিবিআই-ইডির ঘুম ভাঙাতে নিজাম প্যালেসের সামনে ঢাক বাজিয়ে বিক্ষোভ দেখাল দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস কমিটি। কংগ্রেসের স্থান বিশেষে অবস্থান দেখে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। 


কলকাতা থেকে দিল্লি ! দূরত্ব ১ হাজার ৫৬৩ কিলোমিটার। আর রাজ্য়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব কয়েক যোজন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বারবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তলবে যখন প্রকাশ্য়ে প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হচ্ছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তখন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে ঢিলেমির প্রতিবাদে পথে নামল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সিবিআই-ইডির ঘুম ভাঙাতে নিজাম প্যালেসের সামনে ঢাক বাজিয়ে বিক্ষোভ দেখাল দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস কমিটি। বৃহস্পতিবার ফের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ED-র তলবের খবর প্রকাশ্যে আসে। এরপর, শুক্রবার, দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস কমিটি নিজাম প্য়ালেস অভিযানে নামে। ঢাক বাজিয়ে সেখান থেকে কংগ্রেসের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, কেন্দ্রীয় এজেন্সি কার নির্দেশে চলছে ? হাইকোর্ট নাকি বিজেপি সরকারের ?


কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, " এখানে CBI-ED, বিজেপি তাদেরকে মর্টিন সাপ্লাই করেছে, এখানে নাকে তেল দিয়ে ঘুমোনোর জন্য। ভাল কোয়ালিটির তেল সাপ্লাই করেছে। নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর জন্য। আরে, কবে এই প্রতারিত ছেলে-মেয়েরা চাকরি পাবে? কতদিন ধরে তদন্ত চলবে? সারদার চোর, নারদার চোর, চাকরি চোররা প্রকাশ্য রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবাই সব জানে। ওই ED-CBI জানে না? আর কোর্ট যদি না থাকত, এই ED-CBI লুডো খেলত পশ্চিমবঙ্গে। CBI-ED-র এটা তদন্ত হচ্ছে? রোজ থাপ্পড় খাচ্ছে কোর্টের কাছে।"


অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে বিধায়ক তাপস রায় বলেন, "সত্যিকারে বাংলায় যদি বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে হয়, সেটা বাংলায় কংগ্রেসও নয়, সিপিএমও নয়। বাংলায় লড়াই করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্য কোনও দল নয়।" 


ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর মাঝে বসছেন ! সনিয়া গান্ধীর গায়ে উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা জানাচ্ছেন। কাকভোরে ১০ জনপথে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য় পৌঁছে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়.. এসব তো হচ্ছিলই। তার মাঝে, ১৩ সেপ্টেম্বর বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার প্রথম কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকের দিন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে তলব করে ইডি। অভিষেকহীন বৈঠকে, তৃণমূল সাংসদের নামে রাখা হয় একটি ফাঁকা চেয়ার। বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে তলবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল। তিনি বলেছিলেন, "সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে থাকতে পারেননি, কারণ তাঁকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তলব করেছিল। এটা বিজেপি আর প্রধানমন্ত্রীর প্রতিংহিংসার রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়। "


জাতীয় ও প্রদেশ কংগ্রেসের 'ডুয়েল স্ট্যান্ড'। কংগ্রেসের 'দ্বিচারিতা' ? এনিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, "এই প্রশ্নটা দিল্লিতে গিয়ে করতে হবে। এখানকার কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীকে করতে হবে। দেখলেন না, অধীর চৌধুরী বিরোধিতা করেছিলেন বলে, সনিয়া-রাহুল গাঁধী সরাসরি না বলে শরদ পাওয়ারকে কাজে লাগিয়ে ওঁকে বার্তা দিয়ে দিয়েছেন, ধমকে দিয়েছেন। এঁদেরও দেবে।"


বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। কংগ্রেসের এই 'দ্বিচারিতার শেষ কবে ? এ প্রশ্নই এখন রাজনৈতিক মহলে।