সৌভিক মজুমদার, রাজীব চৌধুরী ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ে সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে এ বার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হল। আগামী ২৫ অগাস্ট এই মামলার শুনানি হতে পারে। আদালতের DA নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করে আগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। 


রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা


বকেয়া DA নিয়ে রাজ্য সরকার আদালতের নির্দেশ মানেনি বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর (Hari Krishna Dwivedi) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হল। সোমবার রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ইউনিটি ফোরামের তরফে, বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দায়ের করা হয়।   


চলতি বছরের ২০ মে, সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA ৩ মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু মে থেকে অগাস্ট শেষ হতে চললেও, এখনও বকেয়া DA হাতে পাননি সরকারি কর্মীরা।


বরং এরই মধ্যে বকেয়া DA ৩ মাসের মধ্যে মেটানোর আদালতের নির্দেশ, পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। এই প্রেক্ষাপটেই বকেয়া DA নিয়ে এবার মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হল। বকেয়া DA নিয়ে রাজ্য সরকারের দায়ের করা মামলা এবং DA নিয়ে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা, এই দুটি মামলারই শুনানি হওয়ার কথা অগাস্টের শেষে। 


আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: সিবিআই নয়, ইডি-তেই আস্থা, বিতর্কে পড়েও অনড় দিলীপ, অস্বস্তিত বিজেপি-র অন্দরেই!


ডিএ নিয়ে এই টানাপোড়েনে আবার পুজোর অনুদানও জড়িয়ে গিয়েছে। সোমবারই পুজো কমিটিগুলির বরাদ্দ বাড়ািয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫০ হাজার টাকা থেকে পুজো বাবদ সরকারি অনুদানের পরিমাণ ৬০ হাজার টাকা করা হচ্ছে বলে সোমবারের বৈঠকে ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি যাতে পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুতের বিলে ছাড়ের পরিমাণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করে, সে ব্যাপারেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।


সেই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সরকারি কর্মীদের ডিএ বকেয়া রেখে পুজোর অনুদা বাড়ানো নিয়ে রাজ্যকে নিশানা করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতেই দান-খয়রাতি চলছে। Gপর থেকে একটু ঢিলে হলেই বাঙালি দুর্নীতির কথা ভুলে যাবে। লীলা-মেলা-খেলা করেই বাঙালিকে ভুলিয়ে রাখতে হবে। রাজ্যের মানুষ ৫০০ টাকা নিয়েই খুশি। পার্থ-কেষ্টর নাম কে মনে রাখবে? পুজোয় ক্লাবগুলিকে ছাড় দেওয়া বিদ্যুতের মাসুল গুণতে হবে জনগণকে।"


মহার্ঘ ভাতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য


তবে মঙ্গলবার পুজোর অনুদান ঘোষণা করতে গিয়ে মমতা জানান, পুজো করতে গেলে খরচ আছেই। কেন্দ্র কোনও টাকা দিচ্ছে না। একশো দিনের কাজেও টাকা নেউ। সব প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে তারা। মমতা জানান, তাঁর সরকারের ভাঁড়ার শূন্য। কিন্তু মা দুর্গা তা ভর্তি করে দেবেন বলে আশাবাদী তিনি।