সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: দলের পঞ্চায়েত সদস্যার (Panchayat Member) বিতর্কিত ভিডিও-র (Controversial Video) জেরে অস্বস্তি বাড়তে পারে তৃণমূলের (TMC)। দলীয় বুথ এজেন্টকে দেখিয়ে ভোট দিতে হবে, ভিডিওতে এমনই বলতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা ফুলটুসি দাসকে। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তবে বিষয়ট নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফুলটুসি মেনে নেন, এই বক্তব্য তাঁরই যার পর তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে।
কী ঘটেছে?
দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। এমন সময়ই পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি ব্লকের এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়। ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়ার জন্য গণস্বাক্ষর অভিযান চলছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি ব্লকের ৭ নং অঞ্চলের তিলাবনি বুথে। অভিযোগ, সেখানেই এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা ফুলটুসি দাস সরাসরি গ্রামবাসীদের বলেন, 'এবারের পঞ্চায়েত ভোটে আমরা বুথ এজেন্টকে দেখিয়ে দেব যে আমরা তৃণমূলকে ভোট দিচ্ছি।' পার্টির নির্দেশও এটাই, দাবি করেন তিনি। বস্তুত, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ মোটেও নতুন নয়। বিশেষত বিরোধীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ভুরি ভুরি।
বিতর্কে তৃণমূল...
ভোটের মুখে কর্মীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিধান দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন কামারাহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। বলেছিলেন, 'আমাদের কাছে ভাল ট্রেনার আছে, প্রশিক্ষণ নেবে কর্মীরা। কোথায় কোথায় অস্ত্র পৌঁছচ্ছে জানলে সুবিধা হয়। আমাদের কাছে প্রাক্তন সেনাকর্মীরা আছে, তারাই শেখাবে। কীভাবে লক খুলতে হয়, ল্যাচ কি লাগাতে হয়, শিখবে তৃণমূলকর্মীরা'। তাতে অবশ্য কড়া ভাষায় দলীয় সতীর্থের সমালোচনা করেন ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘পাগলে কিনা বলে ছাগলে কিনা খায়!’মদন মিত্র অবশ্য এতেই থামেননি। পরে অন্য একটি প্রসঙ্গে আবার বলেন, '৯০ মিনিট খেলতে হবে না। একেবারে গোলহীন খেলা হবে। ...খেলতে তো দুদিকে লোক লাগবে। কিন্তু বুথে তো এজেন্টই দিতে পারবে না।' তাঁর প্রশ্ন, 'আমরা কী করব? উল্টো দিকে প্রার্থী নেই তো। আপনারা যদি দেখেন, ভোটার স্লিপে শুধু তৃণমূল ও নোটা ছাড়া অন্য় কোনও প্রার্থী নেই, তখন কোনও বিকল্প থাকবে না।' তৃণমূল জনপ্রতিনিধির এমন মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। সমালোচনা করেন বিজেপি শিবির। রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছিলেন, 'মানুষ তৃণমূলকে প্রত্যাখ্য়ান করেছেন। তাতে তৃণমূল কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছে যে বিরোধীশূন্য নির্বাচন চাইছে।' কটাক্ষ করতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। বলেন, 'উনি কখন কোন মুডে রয়েছেন, বলতে পারব না। কিন্তু এটা বোঝাই যায়, যতই রসবশ থাক, আসলে একটা একাধিপত্য ও দাপটের মনোভাবেই রাজনীতি করেন।'