কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: গত প্রায় দেড় বছর ধরে চাকরির দাবিতে, রোদ-জল-বৃষ্টির মধ্যে যাঁদের দিন কাটছে কলকাতার রাস্তায়, সেই আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের নাম রয়েছে SSC-র প্রকাশ করা অযোগ্যদের তালিকায়। আর এনিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সুমনা ভান্ডারী, ইলিয়াস বিশ্বাস থেকে আবু নাসের ঘরামি। এঁরা সকলেই চাকরির দাবিতে, সাড়ে ছ-শো দিনেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন কলকাতার রাজপথে। অথচ, এই আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের নাম উঠে এল SSC-র প্রকাশিত অযোগ্যদের তালিকায়। 


যাঁরা চাকরিই পাননি, তাঁরাই না কি অযোগ্য? আর, এ-নিয়েই এখন হইচই পড়ে গেছে। বীরভূমের মল্লারপুরের বাসিন্দা সুমনা ভান্ডারী। সুমনা ২০১৬-র SLST-র নবম-দশমের ইংরেজির চাকরিপ্রার্থী। তাঁর নাম রয়েছে, ওয়েটিং লিস্টের ৪ নম্বরে। নিয়োগের পরীক্ষায় ৮৪ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েও, সুমনা এখনও চাকরি পাননি।                                                              


হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার, নম্বর বদল হয়েছে এরকম, ৯৫২ জনের OMR শিট প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, এঁদের সকলের ক্ষেত্রেই গাজিয়াবাদে অভিযান চালিয়ে সিবিআইয়ের উদ্ধার করা হার্ডডিস্কের সঙ্গে, কমিশনের সার্ভারে থাকা নম্বরের ফারাক রয়েছে। শুক্রবার, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই ৯৫২ জনের স্কুলের নাম, বাবার নাম, রোল নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।                      


আরও পড়ুন, চিনে ভয়ঙ্কর হারে বাড়ছে করোনা! ফের কি ফিরতে চলেছে লকডাউন?


এই পরিস্থিতিতে, বিতর্কিত তালিকায় নাম থাকায় এদিন কমিশনে অভিযোগ জানাতে যান আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থী সুমনা ভান্ডারী। তিনি বলেন, "আমি এটায় অপমানিত হচ্ছি, চাকরি তো দিতেই পারল না। উল্টে অযোগ্যদের তালিকায় নাম।" এখানেই শেষ নয়, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে সাড়ে ছশো দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনের পরিচিত মুখ ইলিয়াস বিশ্বাস এবং আবু নাসের ঘরামি। দু-জনেই নবম-দশমের ইতিহাসের চাকরিপ্রার্থী। নাম রয়েছে ওয়েটিংলিস্টে। অথচ তাঁদেরই নাম রয়েছে এসএসসির অযোগ্যদের তালিকাতেও।


এ প্রসঙ্গে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, "ইতিহাসে ১ নম্বর করে বেড়েছে, তাদের নাম এখানে আছে। যাদের নম্বরে মিসম্যাচ হয়েছে, তাদের নাম চলে এসেছে।" যদিও, সুমনা ভান্ডারীর প্রশ্ন, তিনি মামলাও করেননি, তাঁর ১ নম্বরও বাড়েনি। তাহলে তাঁর নাম কী করে তালিকায় এল?


এসএসসি সূত্রে খবর, এই ৯৫২ জনের প্রত্যেকেরই নম্বর বদল হয়েছে। কেউ সাদা খাতা জমা দিয়ে ৫৩ পেয়েছেন। কেউ কয়েকটা উত্তর দিয়েও, চাকরির নিয়োগপত্রের সুপারিশ পেয়েছেন। যদিও, আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলছেন, আদালতের নির্দেশে কারও প্রাপ্য ১ নম্বর বাড়লে, তাঁদের নাম অযোগ্যদের তালিকায় আসবে কেন?