কৃষ্ণেন্দু অধিকারী এবং সন্দীপ সরকার, কলকাতা: লকডাউন (Lockdown), সামাজিক দূরত্ববিধি (Social Distancing), স্যানিটাইজার (Santitizer), নাইট কার্ফু (Night Curfew)। গত কয়েক বছরে এই শব্দগুলোর সঙ্গে খুব ভালোভাবে পরিচিত হয়েছি আমরা। আবারও কি সেই পরিস্থিতি আসতে চলেছে? এই উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা সবার মনেই কমবেশি রয়েছে।                           

  


২০২০ সালে চিনে লুনার ইয়ারের পর কার্যত রকেট গতিয়ে ছড়িয়েছিল করোনার সংক্রমণ। তার প্রায় ৩ বছর পর, সেই এক পরিস্থিতি। চিনে ভয়ঙ্কর হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। হাসপাতাল থেকে শ্মশান-সর্বত্র লম্বা লাইন। চিনের এই ভয়ঙ্কর ছবির জেরে উদ্বেগ ভারতেও। 


আর সকলের মনে একটাই প্রশ্ন? ফের কি লকডাউনের যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে? ফের রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যাবে? ফের কি চাকরি যেতে পারে? আবারও শয়ে শয়ে কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি ফিরতে হবে? মনের কোনে উঁকি দিচ্ছে, ২০২০-র লকডাউনের পুরনো এই ছবিগুলো।


লকডাউনের সেই ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ভারতীয় অর্থনীতি। লকডাউনের সময় কাজ হারানো অসংখ্য় মানুষ এখনও রুজি-রুটির খোঁজে। এরওপর বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা দেদারে ছাঁটাই করতে শুরু করেছে। সরকারের গালভরা নানা প্রতিশ্রুতির মধ্যেই CMIE-র পরিসংখ্যান বলছে, গত রবিবার শেষ হওয়া সপ্তাহে (১৮ ডিসেম্বর) দেশের শহরাঞ্চলে কর্মহীন মানুষের হার পৌঁছল ১১ শতাংশের দোরগোড়ায়। আর গোটা দেশের বেকারত্বের হার ৮.৮৫%। 


আরও পড়ুন, মৃতদেহেও বহাল তবিয়তে বাসা বাঁধছে করোনার নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট, দাবি জাপানের একদল গবেষকের


এই পরিস্থিতিতে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন কোনওমতেই করোনা মোকাবিলার পথ হতে পারে না। বিশ্বজুড়ে যেখানে মন্দা মাথাচাড়া দিচ্ছে, তখন লকডাউন মানে অর্থনীতির কোমর আরও ভেঙে দেওয়া। সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া। চিনে করোনার জেরে এখন হাহাকার হলেও, ভারতে এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তাই লকডাউন একদমই নয়। তবে সামনেই বড় দিন, বর্ষবরণ। প্রচুর লোকের সমাগম। তাই জীবন চলুক নিজস্ব গতিতে, তবে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে।


চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেন, "মানুষ ঠেকে শিখেছে, আবার আগের মতো পরিস্থিতি, প্রচুর লোকের চাকরি গেছে, খেতে পাচ্ছে না। সেটা নিচ্ছই চাইব না। তবে আমাদের সময়ের জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।" এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের চিকিৎসক শিশির নস্কর বলেন, "রোগ থাকবে, সামাজিক অনুষ্ঠান তো বন্ধ করা যাহে না। সবাই মেনটেন করলে রোগ ছড়াবে না।" 


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সতর্কতাই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার।