করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের আবাস যোজনা ঘিরে বিতর্ক। এবার সেই তালিকায় উঠে এল সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম আর তা ঘিরেই বিতর্ক। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের চরি-অনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া গ্রামে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। জানা গিয়েছে, আবাস তালিকায় নাম রয়েছে কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির সিভিক ভলান্টিয়ার অভিজিৎ পাণ্ডের। সূত্রের খবর, তাঁর নিজের নামেও বাড়ি রয়েছে। তারপরেও তাঁর নাম আবাস যোজনা তালিকায় উঠেছিল। তা নিয়েই বিতর্ক হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কাছে ছেলের নাম তালিকায় থাকার কথা স্বীকার নেন সিভিক ভলান্টিয়ারের মা। যদিও মালদার জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়ার দাবি, ডিসেম্বরেই সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম আবাস তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজনের নামে বাড়ি থাকলে, তিনি আবাস যোজনা তালিকায় বাড়ির টাকা পেতে পারেন না। 


আরও অভিযোগ:
ঝাঁ চকচকে পেল্লায় বাড়ি। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের চরি-অনন্তপুর গ্রামে রেশন ডিলার যদুনন্দন দাসেরও নাম রয়েছে আবাস তালিকায়। তবে তাঁর দাবি, আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার জন্য তিনি কোনও আবেদন করেননি। মালদার জেলাশাসক জানিয়েছেন বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন, এমন ১১ জনের নাম গত ডিসেম্বর মাসে বাতিল করা হয়েছে।


আবাস যোজনাকে (Awas Yojana) ঘিরে ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে এসেছিল। সেই সব খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তাতেই সামনে এল অদ্ভূত ঘটনা। দেখা গেল, বিহারের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের নাম রয়েছে বাংলার আবাস যোজনার তালিকায়। মালদা জেলার (Malda News) একটি গ্রামে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে হতবাক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল।


মঙ্গলবার মালদা জেলার রতুয়ার গোবিন্দপুর গ্রামে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সেখানে গিয়ে কার্যতই হতবাক হয়ে যান সকলে। দেখা যায়, বিহারের কাটিহার জেলার বাসিন্দা, সেখানকার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য, শ্যাম যাদবের না রয়েছে বাংলার আবাস তালিকায়। বাড়িতে গিয়ে যদিও শ্যামের দেখা মেলেনি। রতুয়ার ১ নম্বর ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রাম। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের দুই সদস্য গতকাল পৌঁছলে, বাড়ির এক মহিলা সদস্য জানান, তাঁদের এলাকা বিহার এবং বাংলা, দুই রাজ্যের মধ্যেই পড়ে। জায়গাটি নিয়ে বিবাদ রয়েছে। বিষটি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে মালদা জেলা প্রশাসন।


মালদা প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের বিষয়টি জানা ছিল না। গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও-কে।  এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যত দিন যাবে এমন অনেক তথ্য সামনে আসবে। এই সরকারটাই চঞ্চল সরকার। এটা কোনও সরকার নয়। এটা দখলদারির নামান্তর মাত্র। পাহাড় থেকে সাগর, আবাস যোজনায় সর্বত্র একই অবস্থা।  যে যে ভাবে পেরেছেন, তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন। আর প্রান্তিক মানুষরা মাথার ছাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর বাইরে নতুন কোনও দৃষ্টান্ত তৃমমূল সরকার স্থাপন করতে পারবে না।”


আরও পড়ুন: পাঁশকুড়ার মঙ্গলদারি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে আগুন, ভষ্মীভূত দরকারি নথি ও কাগজপত্র