সুমন ঘরাই, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: রাজ্যে নাইট কার্ফু (Night Carfew) নিয়ে কড়াকড়ি। রাত ১০টার পরে, শুধু হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রেই ছাড় থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। সরকারি অফিসে সংক্রমণ রুখতে জারি হয়েছে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ। এদিকে, আজ কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি (BJP) কাউন্সিলর সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) উদ্যোগে চালু হওয়া একটি সেফ হোম (Safe Home) ঘিরে দানা বাঁধে বিতর্ক। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


উদ্বেগজনকভাবে রাজ্যের করোনা গ্রাফ (Corona Graph) বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৫ হাজারের গণ্ডি। বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে ১৫ হাজার ৪২১ জন করোনায় আক্রান্ত। বুধবারের তুলনায় ১৩৯৯ জন বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।


গত বৃহস্পতিবার, রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১২৮। ৭ দিনের মাথায় সেই সংখ্যাটাই ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই বৃহস্পতিবার অবধি সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ৬২৫% বাংলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ল। বুধবার করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৭ জনের।


এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধেয়, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে, লেবুতলা পার্কের পিছনে মধ্য কলকাতা ক্লাব সমন্বয় সমিতির সেফ হোমকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাধে। এ দিন বিকেলেই ১০ শয্যার সেফ হোম উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। সন্ধেয় পুলিশ গিয়ে সেফ হোম বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বিষয়টিকে ঘিরে শুরু হয় চাপানউতোর। 


কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের কথায়, জমিদারের লেঠেল যেমন মাঝে মধ্যে এসে প্রজাদের ওপর চড়াও হয়, তেমনই চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিল, ফিরে গেছে, পুলিশ বলল বন্ধ করে দাও, কেন ওরাও বলতে পারছে না, বলল বন্ধ করে দাও, তোমার ছবি সরাও, আমি প্রশ্ন করলাম, বন্ধ করব যে, আপনার কাছে বন্ধ করার কাগজটা দেখান? আমার কাছে চালানোর কাগজ না থাকতে পারে, ওনার কাছে বন্ধ করার কাগজ আছে? উনি পুলিশ, এটা স্বাস্থ্য দফতর, কর্পোরেশনের এফেয়ার্স।


কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, পারমিশন না নিয়ে পুরসভার প্রপার্টি ব্যবহার করা বেআইনি, তাই পুরসভার থেকে যখন সেফ হোম করি, তখন স্বাস্থ্য ভবনের পারমিশন নিই, সেখান থেকে ডাক্তার, নার্স দেওয়া হয়, যারা এগুলো করছেন, তারা ঠিক করছেন না, মানুষের জীবন নিয়ে আমরা খেলা করতে পারি না, শুনেছি, পুরসভার তরফে ফর্মাল কমপ্লেন করা হয়েছে, বন্ধ করা হয়েছে, সজলের কোনও পেশেন্ট থাকলে প্রতিদিনে পাঠাতে পারে, ২০০ বেডের অ্যারেঞ্জমেন্ট আছে।


বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের কথায়, যতগুলো সেফ হোম আছে সেগুলি বৈধ তো? সবক’টা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেব, আমি কাল স্বাস্থ্য দফতরে যাব কাগজপত্র নিয়ে।


আরও পড়ুন: চন্দ্রকোনায় প্রৌঢ়়কে ধাক্কা মেরে উধাও পুলিশের গাড়ি! অভিযোগ স্থানীয়দের


কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ৩টি সেফ হোমের মধ্যে এখন ২টি-তে মোট ৪৯ জনকে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিউ আলিপুরের উত্তীর্ণ-কেও তৈরি রাখছে পুরসভা। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার বাজারগুলিতে গার্ড রেল বসিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার জন্য কথা বলেছে পুলিশ।