উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, আবির দত্ত : ভোটের আগে থেকেই রণক্ষেত্র কোচবিহার। বিজেপি বনাc তৃণমূল। মার - পাল্টা মার। আঘাত - পাল্টা আঘাত। একদিকে হাঁসুয়া নিয়ে তৃণমূলকর্মীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে, অন্যদিকে বিজেপি অভিযোগ তোলে অস্ত্র নিয়ে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে তৃণমূল। ভোটের বহু আগে থাকতেই এলাকায় পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু ভোটের দিনে শান্তির আবহ আর রইল কই ? উদয়ন বনাম নিশীথের দ্বৈরথ জারি রইল ভোটের দিনও। একের পর এক ভয়াবহ অভিযোগ উঠে এল গণতন্ত্রের উৎসবের মাঝে।
এদিন মাথা ফাটল বিজেপির বুথ সভাপতির। এই নিয়ে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার চান্দামারিতে উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগ, ভোটের আগের রাতে বিজেপির বুথ সভাপতি লব সরকার যখন নিজের বুথে যান সেই সময় তাঁকে রাস্তায় আক্রমণ করে তৃণমূলের লোকজন। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি বিজেপি নেতা। আহতকে দেখতে হাসপাতালে যান কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। বিধায়কের অভিযোগ, গতকাল রাতভর তৃণমূলের বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়িয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনও তাঁর ফোনে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি বিধায়ক।
অন্যদিকে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত কোচবিহারের চান্দামারি। বিজেপির বুথ সভাপতির মাথা ফাটার পর, এবার বুথে এজেন্ট বসানো নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধে। ধান খেতের মধ্যে যুদ্ধং দেহি মেজাজে দেখা যায় দু’পক্ষের কর্মী, সমর্থকদের। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। মাথা ফাটে এক তৃণমূল কর্মীর।
অন্যদিকে কোচবিহারের দিনহাটায় বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়ির সামনে মেলে তাজা বোমা। বিজেপি নেতার সকালে বাড়ির দরজা দিয়ে বেরিয়েই দেখেন বাড়ির সামনে বোমা পড়ে রয়েছে। ওই বিজেপি কর্মীর দাবি, তাঁকে ভয় দেখাতে এই কাজ করেছে তৃণমূল। বিজেপি বুথ সভাপতি শতদল সরকার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনেও জানান। কমিশনের নির্দেশে পুলিশ এসে বোমা উদ্ধার করে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল দায় ঝেড়েছে।
একদিকে যখন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছেন, তখনই শীতলকুচিতে ভোট দিতে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিজেপির কর্মীর মাথায় ও হাতে হাঁসুয়ার কোপ দিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যায় বলে অভিযোগ। আহত বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, তৃণমূলের দুই পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বেই এই হামলা হয়েছে। সঙ্গে ছিল আরও ৪০-৫০ জন সদস্য। বিশাল বাহিনী নিয়ে আক্রমণ চালানো হয় বিজেপি কর্মীর উপর। আক্রান্তের দাবি, বিজেপি করি বলে বলছে , 'পালা। বাঁচতে হবে তো! কোন রাজ্যে আছি! কোন দেশে আছি! অল্পের জন্য বাঁচলাম নতুন জীবন ফিরে পেলাম।'
অন্যদিকে আবার, গোসেরহাট বড় ধাপের ছত্র জুনিয়র হাইস্কুলের বুথের কাছেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভোটাররা। অভিযোগ, ভোট দিতে গেলেই বাড়িছাড়া করা হবে, কেটে নেওয়া হবে হাত-পা, দেওয়া হচ্ছে এমন প্রাণনাশের হুমকি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন নতুন ভোটাররা।
অন্যদিকে দিনহাটায় বিজেপির পোলিং এজেন্টকে অপহরণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বাইক বাহিনীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শুকারুর কুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২১ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট হন বিজেপির মণ্ডল সহ সভাপতি বিশ্বনাথ পাল। কমিশনের দেওয়া ভিডিওতে বিজেপি নেতার অভিযোগ, রাতভর হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূলের লোকজন। ভোটের সকালে বুথে যাওয়ার পথে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পোলিং এজেন্টকে উদ্ধার করে বুথে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, শীতলকুচির পারা ধাপেরছত্র ৫ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১ নম্বর বুথে বিজেপি কর্মীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, শীতলকুচির গেদুপুর হরিসভা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৩ নম্বর বুথে দুই বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে
আরও পড়ুন :